পেটে মেদ জমার কারণ

অনেকেই খাওয়া কম খান, কিন্তু ভুঁড়িটা ঠিকই তার নিজের ইচ্ছা মতো বাড়তে থাকে। আবার কখনো দেখা যায় যে, ওজন বেশ স্বাভাবিক আছে কিন্তু ভুঁড়ি বেড়েই চলছে। এমতাবস্থায় ভুঁড়িওয়ালা ঠিকমতো বুঝতেই পারেন না, ঠিক কি কারণে তার ভুঁড়ি বেড়েই চলছে। আজ আমি কয়েকটা ভুঁড়ি বাড়ার কারন বলব,

১। সকালের নাস্তাঃ

সকাল থেকেই শুরু করা যাক। সকালে অনেকেই দেরি করে খান বা না খেয়ে কাজে চলে যান, যা পুরাপুরি পেটে মেদ জমার পক্ষে কাজ করে। মনে রাখা দরকার যে, সকালের নাস্তা হল রোজার ইফতারের মতো জরুরী। আর খেতেও হবে পেট ও মন ভরে, যেন দিনের শুরুটা হয় রাজার হালে।

২।অনেক্ষন একটানা বসে থাকলেঃ

বাসায়, অফিসে বা অন্য কোন কাজের সময় একভাবে অনেক্ষন বসে থাকলে পেটে মেদ জমে। তাই উচিত হবে প্রতি এক/দেড় ঘণ্টা পরপর নিজের সিট থেকে উঠে খানিক হাঁটাচলা করা। আর বাসায় থাকলে গৃহস্থালির প্রায় সব কাজ নিজে নিজে করা।

৩। কোন এক বেলার খাবার বাদ না দেয়াঃ

ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই খাওয়া দাওয়া কমিয়ে দেন। চিকিৎসকের মতে, খাবারের পরিমান কমালে সমস্যা নেই, বরং কোন একবেলার খাবার বাদ দিলে তা ভয়াবহ আকার নিতে পারে। এর মধ্যে পেটের মেদ অন্যতম। সারাদিনের খাবার সময়কে আমরা ৫/৬ টি সময়ে ভাগ করে খেতে পারি। এতে খাবারে সময়ের ব্যবধান কম হবে এবং অভার ইটিং হবে না।

৪। পর্যাপ্ত পানি পানঃ

অনেকেই তৃষ্ণা পেলে সফট ড্রিংক বা জুস পান করেন। এতে বাড়তি ক্যালরি শরীরের মেদ বাড়াতে কাজ করে। পিপাসা লাগলে পানি অথবা দেশীয় ফল খাওয়া যেতে পারে। আবার পর্যাপ্ত পরিমান পানি পেটের মেদ কাটতেও সাহায্য করে।

৫। বিষণ্ণতাঃ

বর্তমান জীবনে বিষণ্ণতা একটি ভয়াবহ ব্যাধি। এই বিষণ্ণতা পেটে মেদ জমার একটি অন্যতম কারণ। দেখা যায়, বিষণ্ণ থাকলে, দেহে কর্টিসোল হরমোন বের হয়, যা পেটের চারদিকের চর্বি জমাতে সাহায্য করে। তাই বিষণ্ণতা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ দরকার।

৬। অপর্যাপ্ত ঘুমঃ

একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ৭/৮ ঘণ্টা রাতে ঘুমানো খুবই প্রয়োজন। কম ঘুমিয়ে বেশিক্ষন জেগে থাকলে তা কর্টিসোল হরমোনের উৎপাদন বাড়ায় এবং সাথে সাথে মিষ্টি জাতীয় খাবার বা যে কোন খাওয়ার ইছছাকেও বহুগুন বাড়িয়ে দেয়, যা পেটের মেদ জমার অন্যতম কারণ।

৭। ভরপেট খাওয়াঃ

দেখা যায়, যখন আমরা কোন একবেলার খাবার খাই, তখন পেট ভরে খাওয়ার চেষ্টা করি। যা পেটের মেদ জমার আরেকটি অন্যতম কারণ। এক্ষেত্রে আমাদের উচিত হবে, পেটের কিছু অংশ ফাঁকা থাকতেই খাওয়া শেষ করে ফেলা।

৮। ভাত ঘুমঃ

আমাদের অনেকেরই ধারনা, দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুম দিলেই বুঝি ভুঁড়ি হয়, যা একেবারেই ভুল ধারণা। দুপুরে খাবার পর, তা হজম করার জন্য শরীরের ৬০/৭০ ভাগ শক্তি ব্যবহৃত হয়। এ শক্তি ক্ষয়ের জন্য আমাদের ঘুম পায়। তাই চেষ্টা করবেন দুপুরে অন্তত আধ ঘণ্টা ঘুমাতে এবং ঘুম থেকে উঠে চলাফেরা করতে।

তবে যদি কারো ভুঁড়ি বেশ বড়সড় হয়েই যায়, সেক্ষেত্রে ব্যায়ামের বিকল্প আর কিছুই থাকবে না।

যে কোন রোগ বা সমসার জন্য ডাক্তারের স্মরনাপন্ন হতে হবে।

ডাঃ তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com

(Weight reduction and Life Style Medicine)

Leave a comment