ভুঁড়ি কেন কিছুতেই কমছে না, কোন ব্যায়ামে ভুঁড়ি কমবে….

ব্যায়াম ১

 

ব্যায়াম ২

অনেকেই আমরা চর্বি কমানোর জন্য কঠোর ও মনোযোগের সাথে ব্যায়াম করে থাকি। কিন্তু দেখি হাত, পা, মুখের ওজন ঠিকই কমছে কিন্তু ভুঁড়ি প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থায় পরে আছে। তখন মনের অবস্থা যে কি হয়, তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। কেন এমন হয় জানেন? আমাদের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের ফ্যাট সেল থাকে, কোনটা আলফা, আবার কোনটা বিটা নামে পরিচিত। আলফা সেলগুলো ব্যায়ামের ফলে সহজেই কমতে থাকে কিন্তু বিটা সেলগুলো অনেকটাই ঘাড়-ত্যারা।  এরা সহজে ব্যায়ামে কমে না। আমাদের হাত, পায়ের ফ্যাট সেলগুলো অনেক ক্ষেত্রেই আলফা, তাই কমেও তাড়াতাড়ি। কিন্তু পেটের যে ফ্যাট সেলগুলো আছে সেগুলোর অনেকেই বিটা ফ্যাট সেল। তাই এগুলো কমতেই চায় না। কিন্তু আশার কথা হোল, এই পেটের মেদ কমানো কঠিন ঠিকই তবে অসম্ভব নয়। আপনি চাইলে কমাতে পারবেন কিন্তু কষ্টসাধ্য। সঠিক ব্যায়াম ও সুষ্ঠু খাদ্যাভাসের মাধ্যমে আপনি তা করতে পারেন। আর এই পরিবর্তন দেখতে পাবেন প্রায় ৩ মাসের মাথায়। এই ৩ মাস আপনাকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতেই হবে। এটা শরীরের একটা স্বাভাবিক নিয়ম, যা আপনাকে মানতেই হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা হতাশ হয়ে ব্যায়াম ছেড়ে দেই আর ভাবি আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। এক্ষেত্রে আপনি যদি জানতে পারতেন যে এটাই স্বাভাবিক, তাহলে হয়তো আপনি আশা ছাড়তেন না। তাই আপনার দরকার হবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া, যিনি আপনাকে সাহায্য করবেন সঠিক লক্ষ্যে পৌছাতে। আবার অনেক ক্ষেত্রে আমরা ভুল নিয়মে ভুল ব্যায়াম করে থকি, সেক্ষেত্রেও ফলাফল হবে শূন্য। তাই আপনার উচিৎ হবে ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া।

 আজ আমি পেটের মেদের জন্য আমার চিকিৎসাবিদ্যা থেকে ২ টি পেটের ব্যায়াম দেখাবো। সঠিক ভাবে করতে পারলে সুফল আসবে আশা করি। তবে আমি কোন গ্যারান্টি দিচ্ছি না, একেক মানুষের শরীরের গঠন একেক রকম। কোন ব্যায়ামে কার কেমন উপকার হবে, সেটা আগে থেকে শতভাগ নিশ্চিত করে বলা আসলে অসম্ভব। যেহেতু আমি আপনাদের মনিটর করতে পারছি না, সেহেতু আপনারা আপনাদের নিজ দায়িত্বে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়ামগুলো করবেন।

ব্যায়াম ১

. এই পদ্ধতি মাটিতে শুয়েই করতে হবে। এতে দুই হাত শরীরের পাশে সোজা টানটান করে রাখা থাকবে। দুই পা কে জোড়া করে নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ৯০ ডিগ্রি সোজা করে তুলে রাখতে হবে। এর পর নিঃশ্বাস নিতে নিতে পা জোড়া অবস্থায় নামাতে হবে। এই সময় মাথা পিঠ কোমর মাটি থেকে একটুও উঠবে না। এই ভাবে পা তুলে নামিয়ে আবার তুলতে হবে কিন্তু হাঁটু ভাঁজ দেয়া যাবে না। এই ভাবে মোট ১৫/২০ বার করে একটি সেট সম্পূর্ণ করতে হবে। প্রথমে এটি দুই বার, পরে তা বাড়াতে হবে।

(ছবি দেখুন)

এতে তল পেটের মেদ কমে।

প্রথম প্রথম আপনার পা দুটো হয়তো উপরে উঠতে চাইবে না। একটু একটু করে পা উপরে উঠান। সময় নিন, সময় নিয়ে চেষ্টা করুন, তবে হাল ছাড়বেন না। শুধু হতাশ না হয়ে কচ্ছপের মতো চেষ্টা করতে থাকুন। শেষ পর্যন্ত কিন্তু কচ্ছপই জয়ী হয়েছিল।

ব্যায়াম ২

. একটি ম্যাটের উপর সোজা হয়ে শুয়ে হাতদুটো মাথার পিছনে নিন। এবার ধিরে ধিরে ঘাড় ও মাথা তুলে সামনের দিকে ঝোঁকান। এর সঙ্গে সঙ্গে পা দুটো ভাঁজ করে বুকের কাছে আনার চেষ্টা করুন। মনে মনে ১৫ পর্যন্ত গুনুন। ঘাড় তোলা অবস্থাতেই পা দুটো সোজা করুন, আবার ভাঁজ করে বুকের কাছে আনুন। (ছবি দেখুন)

এই ব্যায়াম দুটিতে পেটের পেশিতে চাপ ও টান পড়ে, ফলে জমে যাওয়া মেদগুলো নরম হয় ও গলতে থাকে। তবে মনে রাখবেন, পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে এই ব্যায়ামগুলোর জন্য, নতুবা হয়তো উপকার পাবেন না।

কতক্ষন করবেন

দিনে ৪/৫টি সেশন করুন। আর প্রতি সেশনে ১৫/২০ বার করে করতে থাকুন। এক্ষেত্রে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজের পরপর করতে পারেন, এতে ব্যায়াম বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে না। প্রথম প্রথম কষ্ট হবে পরে তা আয়ত্তে এসে যাবে।

কোন রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ জরুরী।

……ডাঃ তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com

(Weight Reduction and Life-Style Medicine)

Leave a comment