
“আমি পারি না, কিভাবে করবো জানিনা…।”
হাঁ, বুঝলাম তুমি পারো না। কারন তুমি বাঙ্গালী নারী, তাই? ওমা রাগ করলে যে, তুমি না বললে তুমি পারনা, তাই বললাম আরকি! তুমি তো বড়ই রহস্যময় মরীচিকা! পারি না বলে সহানুভূতি পেতে চাও, আবার বাঙ্গালী বললে রাগ কর, তো আমি বলবটা কি? সেও আরেক জ্বালা, চুপ করে কেন আছো, সে প্রশ্নের ধারে-কাছেও যেতে চাই না…।
আমি বলি কি, তুমি যে কোনো একটা পথ বেছে নাও। তুমি কি পারো না একজন বুঝবান বাঙ্গালী নারী হতে? মানলাম, তোমার স্বামী, সংসার কিম্বা সমাজ তোমাকে গুরুত্ব দেয় না, অপারগ মনে করে। বুদ্ধিমানের কাজ হবে, কারো সাথে তর্কে না যেয়ে যদি নিজেকে সত্যি করে জানো, আর, কি তোমার লক্ষ্য তার উত্তর খুঁজে বের করো। তর্কে গেলে তো হেরে গেলে…। আরে বোকা, তর্ক করতে যে তত্ত্ব লাগে, তা হয়তো তোমার নেই। শুধু মাত্র বাঙ্গালী নারী, এই তত্ত্ব দিয়ে তো অনেক তর্ক করলে, আবার অনেকবার জিতেও গেলে। এখন সময় এসেছে আসল তত্ত্ব খুঁজে বের করার। নিজের কথা বাদ দিলাম, তর্কের জয় তো নিশ্চিত করতে হবে, তাই না! ধরো, তোমার স্বামী মনে করে, তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না বা তুমি সামলাতে পারবে না…। তার কোথায় যুক্তি থাকলেও থাকতে পারে, হতে পারে তার প্রমাণ আমাদের নানী দাদীরা। তুমি যদি তোমার স্বামীর কথার পাশাপাশি নিজে নিজে একটু চিন্তা করতে, কি করলে আমাকে দিয়ে অসাধ্যকে সাধন হবে! উন্নত বিশ্বের নারীরা তো সব পারছে, আমরা কেন নয়? জানি, এর উত্তর তোমার জানা। চট করেই তুমি সমাজ ব্যবস্থার দোষ দিয়ে দিবে। বাঙ্গালী নারী কিছু পারুক বা না পারুক, অন্যকে দোষ দিতে বেশ পারদর্শী। কি আমাকে গালি দিচ্ছ, তাই না? দাও, আমি নিন্দুককে বড় ভালবাসি। তোমাদের এই গালি আমার বাঁধা দূর করতে সাহায্য করতে পারে, তা জানো? হাঁ আমি ঠিক এই তীব্র উপলব্ধিটার কথাই বলছি, যেটা সত্যি আমাদের খুব দরকার। আর যদি কেউ সত্যিকারের ভুল ধরিয়ে দেয়, তাহলে তো আরও ভালো, উন্নতি হবে আমার। আমরা কি পারি না, আমাদের স্বামীদের সাথে পরামর্শ করতে, যে কি করে আমরা এগুতে পারি। খেয়াল করে দেখ, তোমার স্বামী কিন্তু একজন কন্যার পিতাও বটে। সে নিশ্চয় তার কন্যার স্বাবলম্বীতার জন্য যারপর নাই চেষ্টা করবে। এতে কি প্রমাণ হয়, তোমার স্বামী, সেও একজন মানুষ, তারও মন আছে, ধৈর্য ও উপমা দিয়ে বুঝালে সেও বুঝে। তবে স্বামীর আগে নিজেকে শতভাগ বিশ্বাস করাতে হবে, এটা ভোলা যাবে না। তাই স্বামীদের সাথে সংঘাত নয়, বন্ধু হয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে আলোচনা করা উচিৎ। কারন ঝগড়া বিবাদ কোন সমস্যার সমাধান আনতে পারে না, বরং তা নারীকে বানায় আরও অবলা আর অচল। আজ বাঙ্গালী হয়ে জন্মেছি বলেই হয়তো এতো বাধা। বাঙ্গালী হয়ে যখন জন্ম নিয়েই ফেলেছি, তখন অবস্থার উন্নতির জন্য লড়াই করা কি পাপ? এই পাপকে মাথার মুকুট বানিয়েতো বেশ দিন পার করে দিল বাঙ্গালী নারীরা। উন্নত বিশ্ব আমাদের কি শিক্ষা দেয়? নারী অতীতে অবহেলিতই ছিল সেসব দেশে, কিন্তু তারা সেগুলো জয় করে আজ শীর্ষে!
……তিনা শুভ্র
