
যারা হাঁটা দিয়ে শুরু করে, হাঁটাতেই সারা দিনের শরীরচর্চার ইতি টানতে চান, তাদের উচিৎ হবে একটি বিশেষ নিয়মে, বিশেষ পদ্ধতিতে হাঁটার চর্চা বা অভ্যাস করা। হাঁটার এই বিশেষ অভ্যাসকে আমরা ‘ফিটনেস ওয়াকিং’ বা ‘এরোবিক ওয়াকিং’ বলে থাকি।
এরোবিক্স কথাটার মধ্যে লুকিয়ে আছে ‘এয়ার’ শব্দটি। এয়ার মানে এখানে অক্সিজেন। শরীরে যে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যাচ্ছে, তাকে ঠিক মতো দহন করতে বেশি অক্সিজেনের জোগান দেওয়াই এরোবিক্সের মূল কথা। অক্সিজেন মানেই সুস্থতা, রোগমুক্তি এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা।
এরোবিক ওয়াকিং হোল এক বিশেষ ধরনের হাঁটা, যেখানে আপনাকে ঘণ্টায় সাড়ে তিন থেকে চার মাইল গতিতে অন্তত তিরিশ মিনিট হাঁটতে হবে (কিংবা ১৩-২০ মিনিট/ মাইল)
হিসাবটা সোজা, আপনি যত দ্রুতগতিতে হাঁটবেন, প্রতি মিনিটে আপনার ততো বেশি ক্যালরি পুড়বে।
অনেকে পেটের মেদ কমানোর জন্য আলদাভাবে পেটের মাংসপেশির ব্যায়াম করে থাকেন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, আপনি যদি আপনার পুরো শরীরের মেদ না কমান, তাহলে শুধু পেটের মেদ কমানো সম্ভব নয়। শুধুমাত্র পেটের ব্যায়াম করলে হয়তোবা পেটের মাংসপেশি মজবুত হয় কিন্তু পুরোপুরি মেদ ঝরে যায় না। তাই আপনার উচিত হবে প্রথমে পুরো শরীর থেকে বাড়তি মেদ কমানো। আর যদি তা সম্ভব হয় তাহলে এক সময় আপনি খেয়াল করবেন যে, পুরো শরীরের মেদ কমার সাথে সাথে আপনার পেটের মেদও কমতে শুরু করেছে।
কেউ যদি দ্রুত পেটের চর্বি কমাতে চান, তাহলে ব্যায়ামের সময়সীমা বাড়িয়ে দিতে হবে।
আপনি যদি প্রতিদিন ৪০/৪৫ মিনিট জোরে জোরে হাঁটেন বা জগিং করেন, তখন দেহের জমা চর্বি গুলো ভাংতে থাকে। এই সময়ের পর কেউ যদি বাড়তি ১০/১৫ মিনিট জগিং বা জোরে জোরে হাঁটেন, তাহলে একটু একটু করে আরও জমা চর্বি গলতে থাকবে। এভাবে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী জগিং করবেন বা জোরে জোরে হাঁটবেন। নিজে থেকে হুট করে একদিনেই ৪০/৪৫ মিনিট জোরে জোরে হাঁটা ধরবেন না। এতে করে আপনার হার্ট, ফুসফুসের এমনকি পুরো শরীরে ক্ষতি হতে পারে। প্রথমে ৫ মিনিট, পরে ১০ মিনিট অল্প অল্প করে শুরু করতে পারেন। তবে করতে গিয়ে অসুস্থ বোধ করলে সাথে সাথে থামিয়ে দিবেন। এজন্য ব্যায়াম শুরুর আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরী।
এরোবিক হাঁটা বা জোরে জোরে হাঁটার উপকারিতাঃ
১। রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে, ফলে হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে থাকে।
২। রক্তে ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়, ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়।
৩। রক্তে চিনির পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে।
৪। তাছাড়াও, এরোবিক্স রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। ফলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে। যাঁদের হাঁপানির সমস্যা, তাদের হাঁপের টান কমিয়ে আনে এরোবিক্স। ফুসফুস পূর্ণমাত্রায় কর্মক্ষম থাকলে ভাইরাল সংক্রমণে সর্দি-কাশির মতো রোগ কমবে।
৫। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এই শারীরচর্চা রক্তে অ্যান্টিবডির পরিমাণ বাড়িয়ে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে।
যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
https://teenasuvrosworld.wordpress.com
(Weight Reduction and Life-Style Medicine)
