
রক্তচাপ কমে যাওয়া বা লো প্রেশার নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন। এ নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে আমরা অনেক সচেতন তবে নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে তেমন গুরত্ব দেই না। গরমে অনেকেরই রক্তচাপ লো হয়ে যায়। ঘেমে শরীরে যে পানি ও লবন-শূন্যতা তৈরি হচ্ছে তা থেকেই হতে পারে লো ব্লাড প্রেসার। মানবদেহে রক্তচাপের একটা স্বাভাবিক মাত্রা আছে। সাধারণত একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ হওয়া উচিত ১২০/৮০। এর উপর ভিত্তি করেই উচ্চ রক্তচাপ আর নিম্ন রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়। প্রেসার বৃদ্ধি বা হ্রাস দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ এর আশেপাশে থাকে তা হলে একে লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়।
লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণঃ
১) শরীরে পানির অভাব, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত বমি করা, রক্তপাত, রক্তস্বল্পতা।
২) সঠিক বা সুষম খাবার না খাওয়া বা অপুষ্টি বা বদহজম।
৩) অতিরিক্ত পরিশ্রম, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া।
৪) অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা অতিরিক্ত মানসিক চাপ।
৫) অপর্যাপ্ত ঘুম।
৬) হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
৭) গর্ভাবস্থায়
লো প্রেসারের লক্ষণঃ
১. মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা অনুভূত হওয়া, বা মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
২. বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে হঠাৎ মাথা ঘুরে যাওয়া বা ভারসাম্যহীন হয়ে যাওয়া।
৩. চোখে অন্ধকার বা ঝাপসা দেখা।
৪. অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদ কম্পন হওয়া বা বুক ধড়ফড় করা।
৫. ঘনঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া।
৬. হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
৭. বমিভাব হওয়া।
৮. খুব বেশী তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া।
৯. প্রস্রাব কমে যাওয়া।
১০. শারীরিক বা মানসিক দুর্বলতা।
লো নাকি হাই প্রেশার—কোনটি বেশি খারাপ?
দুটোই খারাপ, তবে যখন প্রশ্ন করা হয় কোনটি বেশি খারাপ? নিঃসন্দেহে লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ বেশি খারাপ। কারণ, কোনো কারণে প্রেশার কমে গেলে তাৎক্ষণিক শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন কিডনি, মস্তিষ্ক ইত্যাদি নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং তাৎক্ষণিক মৃত্যুও হতে পারে। এ জন্যই ডায়রিয়ায় পানিশূন্যতা রোধে শিরায় স্যালাইন দেওয়া হয়। তবে উচ্চ রক্তচাপ আকস্মিক ও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। তাই উচ্চ রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিৎ।
লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে করণীয়ঃ
ভালো বিশ্রাম বা একটি সুন্দর ঘুমই পারে আপনাকে মোটামুটি সুস্থ করে তুলতে। আমরা যে সমাজে বাস করি, সেখানে আমাদের উপযুক্ত খাদ্যের অভাব হওয়ার কথা নয়, যদি না কোন স্বাস্থ্য সমস্যা না থাকে। তাই লো প্রেসার বা হাই প্রেসার দুটোর ক্ষেত্রে ঘুম একটি উত্তম ওষুধ।
১। নিম্ন রক্তচাপের ভুক্তভোগীরা অনেকক্ষণ একই স্থানে বসে বা শুয়ে থাকবেন না।
২। অনেকক্ষণ ধরে বসে বা শুয়ে থাকার পর ওঠার সময় সাবধানে ও ধীরে ধীরে উঠুন।
৩। ঘন ঘন হালকা খাবার খান। বেশি সময় খালি পেটে থাকলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে।
৪। সবুজ শাকসবজি, ডিম, দুধ, ডাল, বিভিন্ন সুষম খাদ্য খেতে হবে।
৫। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
৬। চাইলে খাবার সময় পাতে এক চিমটি করে লবণ খেতে পারেন।
৭। দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় গ্লুকোজ ও স্যালাইন রাখুন।
যেকোন রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
…………চলবে
https://teenasuvrosworld.wordpress.com
(Weight Reduction and Life-Style medicine)
