ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য কোন কোন খাবার বাদ দিতে হবে…..

১. প্রচণ্ড উত্তাপে দীর্ঘক্ষণ ধরে খাবার ভাজি, রান্না বা পোড়ানো হলে অ্যাক্রাইলেমাইড উৎপন্ন হয়, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই মচমচে করে তৈরি করা হলে অ্যাক্রাইলেমাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়। আবার ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও আলুর চিপস তৈরিতে ক্ষতিকর ও অস্বাস্থ্যকর ট্রান্সফ্যাট ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে বাসায় বানানো ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও আলুর চিপস খেতে পারেন। তবে সেই ভাজি বা রান্না হতে হবে ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় অল্প সময়ের জন্য। ফ্রাই করার পর তৈরি খাবার ওভেনে রেখে শুকিয়ে নিলে খুব ভালো হয়।

২. মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে আজকাল ঘরে ঘরে পপ কর্ণ তৈরি করা হয়। এক ধরনের বিশেষ প্যাকেটে কর্ণ রেখে মাইক্রোওয়েভে দিলে মিনিটের মধ্যেই তা হয়ে যায়। কিন্তু এ পদ্ধতিতে খই তৈরি করে খাওয়ার মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি আছে। এক্ষেত্রে প্যাকেটজাত ছাড়া, ঘরে পপ কর্ণ ভেঁজে খাওয়া যেতে পারে।

৩. মোটা মানুষ ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ ও স্ট্রোকে বেশি আক্রান্ত হয়। স্থূলতার ভয়ে আজকাল অসংখ্য মানুষ চিনির পরিবর্তে ডায়েট, জিরো ক্যালরি এবং লো-ক্যালরির কৃত্রিম চিনিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ক্যালরিবিহীন কৃত্রিম চিনি ওজন কমাতে বা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করলেও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

৪. পরিশোধিত সাদা আটা:
আটাকে যখন পরিশোধিত করা হয় তখন প্রায় তার সব পুষ্টিগুণই নষ্ট হয়ে যায়। পরে একে ক্লোরিন গ্যাসের সাহায্যে ব্লিচ করা হয়, যাতে ক্রেতার চোখে আকর্ষণীয় লাগে। এতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তাই পরিশোধিত সাদা আটার পরিবর্তে গম, কাঠবাদাম বা বার্লির আটা খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

৫. সোডা বা কোল্ড ড্রিঙ্ক অতি পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত পানীয়। সোডা শুধু তৃষ্ণা নিবারণ করে না, সোডা পান ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ায়। অন্যান্য মিষ্টি কোমল পানীয়র মতো সোডার মধ্যেও রয়েছে অ্যাসপার্টেমের মতো অনেক কৃত্রিম চিনি, নানাবিধ কেমিক্যাল ও ডাই।

৬. লবণে জারিত/লবন বেশি- এমন খাবার বা স্মোকড মাংস, হটডগ, সালামি, মিটলোফ এবং সসেজ বহু মানুষের দৈনন্দিন জীবনের খাবার। এসব খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় বেশ দ্রুত গতিতে।

৭. বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা মাছ:
বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা মাছদের অত্যন্ত অবৈজ্ঞানিকভাবে বড় করা হয়। সেই সঙ্গে চাষের সময় মাছেদের নানাবিধ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও পরজীবিদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে নানা ধরনের জীবণুরোধকারী ওষুধ, কীটনাষক ও অন্যান্য ‘কারসিনোজেনিক’ রাসায়নিক উপাদান ব্যাবহার করা হয়। ফলে এই ধরনের মাছ খেলে শরীরে ওইসব কার্সিনোজেনিক উপাদানের মাত্রাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, প্রাকৃতিক মাছের তুলনায় চাষ করা মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণও কম থাকে। তাই যতটা সম্ভব নদী বা সমুদ্রের মাছ খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এমন চাষ করা মাছ খাওয়া শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়।

৮. টিনজাত যেকোনো খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারন টিনজাত করার জন্য নানা প্রিজারভেটিভ ব্যাবহার করা হয়, যা ক্যান্সার সহ নানান জটিল রোগের কারন।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

…………….

…তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com
(Weight Reduction and Life-Style Medicine)

Leave a comment