যারা ওজন কমাতে কঠিন ডায়েট করছেন কিংবা শরীরের ওজন যাদের বাড়তি, তাদের গলব্লাডার বা পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি অনেক বেশি…… তাই নিয়মিত হাঁটুন, ঝুঁকি কমান।

……………………

বর্তমানে প্রায় পরিবারের কোন না কোন আত্মীয়, পিত্তথলির পাথরে আক্রান্ত হয়েছেন বা হচ্ছেন। আতঙ্কিত না হয়ে, রোগটির কারণ ও প্রতিকার জানুন ও অন্যকে জানান।
পেটের ডানদিকে লিভারের পেছনে ও তলার দিকে থাকে পিত্তথলি। পিত্তরস তৈরি করাই এর কাজ। খাবার হজমে, বিশেষ করে চর্বিজাতীয় খাবার হজম করতে পিত্তরস দরকার হয়। নানা কারণে এই পিত্তথলিতে বিভিন্ন পদার্থ অতিরিক্ত জমে গিয়ে পাথরের সৃষ্টি করে। মূলত দুই ধরনের পাথর পাওয়া যায়; কোলেস্টেরল পাথর ও পিগমেন্ট পাথর। উন্নত বিশ্বে ৯০% পাথরই কোলেস্টেরল দিয়ে তৈরি।

কাদের হয় বেশিঃ

এ সমস্যা মেয়েদের বেশি হলেও ছেলেরাও বাদ পরছেন না।
ডাক্তারি ভাষা অনুযায়ী “ফাইভ এফ (5F)ফ্যাক্টর” বলে একটি বিষয় আছে- যাদের পিত্তথলির পাথর বেশি হয়, যেমন…
১) ফিমেইল (নারীদের বেশি হয়)

২) ফ্যাটি (মোটা মানুষের বা যারা অতিরিক্ত ফ্যাটি খাবার খান, তাদের বেশি হয়)

৩) ফরটি (৪০ বছরের পর বেশি হয়)

৪) ফারটাইল (প্রজননক্ষম নারীদের বেশি হয়, যাদের দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাবার অভ্যাস আছে )

৫) ফেয়ার (ফর্সা)

মেনে চলুন কিছু নিয়মঃ

পিত্তথলিতে পাথর প্রতিরোধে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে, যেমন-

১. অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রতিদিন নিয়ম করে জোরে জোরে হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন। শরীরে চর্বির পরিমান বেশি হলেও, হাঁটা আপনাকে সুফল এনে দেবে।

২ অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করুন। প্রানিজ চর্বি বাদ দিন আর উদ্ভিজ্জ চর্বি বা তেল খান, সামুদ্রিক মাছ খান।

৩। পরিমাণ মত পানি পান করুন।

৪. ওজন কখনই রাতারাতি কমাবেন না। ওজন কমাতে ক্রাশ ডায়েট না করে নিয়ম মেনে ডায়েট করুন। রাতারাতি ওজন কামালে বা ক্রাশ ডায়েট করলে, পিত্তথলিতে পাথরের কারন বহুগুন বেড়ে যায়।

৫। কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ যদি ঘন ঘন খেয়ে থাকেন, তা হলেও পিত্তথলিতে পাথর জমার আশঙ্কা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ খাবেন না।

৬. লো ফ্যাট বা স্কিমড দুধ বা দুগ্ধ জাতীয় খাবার খান। দুধ খাওয়া একেবারে বাদ দিবেন না। এতে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি সহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।

৭. অতিরিক্ত মিষ্টি, তেল, ঝাল, মশলাযুক্ত খাবার বর্জন করন।

নিয়মিত হাঁটা এমনই একটি পন্থা, যা শুধু মোটা মানুষকেই নয়, যেকোনো স্বাস্থ্যের কাউকে করে দিতে পারে সব দিক থেকেই সুস্থ এবং প্রানবন্ত।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

……………

……তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com
(Weight Reduction and Life-Style Medicine)

Leave a comment