প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটুন, হেঁটে হেঁটে বাত বা আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধ করুন……

………………

আমরা যাকে বাত বলি, সেটাই হোল আর্থ্রাইটিস। সাধারণত হাঁটু, কনুই, আঙুলের গাঁট, হিপ জয়েন্টগুলোতে এই ব্যথা হয়। বয়স্ক মানুষদের মধ্যে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি হলেও, কিছু ক্ষেত্রে অপ্রচলিত বাতের অসুখে কিশোর কিশোরীরাও ভোগে। আর্থ্রাইটিস বা বাতের অসুখের প্রাথমিক লক্ষণ হলো হাড়ের জয়েন্টে জ্বালাপোড়া, হাত, পা বা বিভিন্ন জায়গায় ফুলে যাওয়া এবং হাঁটা-চলায় অসুবিধা অনুভব করা৷

বাত রোগের নানান কারনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হোল অতিরিক্ত ওজন বা ওবেসিটি। সাধারণত অতিরিক্ত ওজন, শরীরের জয়েন্টগুলোর উপর অতিরিক্ত চাপ স্থাপন করে। এতে জয়েন্টের বেশ ক্ষয় হয়। তাই বাড়তি ওজন মানেই বাড়তি ব্যথা। অতিরিক্ত মেদ সাধারণত কোমরে জমে। আর সেখান থেকেই শুরু হয় ব্যথা। আর তা ধিরে ধিরে হাঁটুতে নামে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে জয়েন্টের উপরে চাপ অনেকটাই কমে যাবে। ফলে জয়েন্টের ভিতরে থাকা কার্টিলেজের আরও ক্ষয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমবে এবং ব্যথাও কমে যাবে। তাই বাত থেকে দূরে থাকার প্রধান শর্তই হোল উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন ঠিক রাখা।

নিয়মিত হাঁটলে বা ব্যায়াম করলেো যে শুধু ওজন কমবে তাই নয়, শরীরের জয়েন্টগুলোও থাকবে সুস্থ ও স্বাভাবিক।

অনেকে মনে করেন যে, বেশি হাঁটাচলা করলে হাঁটু বা কোমরের বাত বাড়তে পারে, এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বেশি হাঁটলে কখনই বাতের সমস্যা বাড়বে না। বরং যাঁদের ওজন বেশি, তাঁরা বেশি হাঁটলে তাঁদের ওজন কমবে। যা বাতের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। ব্যায়াম আপনার অসুস্থ জয়েন্টগুলোর চারপাশের পেশীকে শক্তিশালী করে দেয়। তাই জয়েন্টের সচলতা অনেকটাই বজায় থাকে। তবে এক্ষেত্রে আপনার ফিজিওথেরাপিস্ট এবং ডাক্তারের পরামর্শ ভীষণ জরুরি।

দীর্ঘদিন এ রোগে ভুগলে শরীরের জোড়াগুলো তার নিজস্ব আকৃতি হারিয়ে ফেলতে পারে। ফলে রোগীর বিভিন্ন রকম অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি পুরোপুরি পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।

রোগটি সম্পূর্ণভাবে হয়তো ভালো হবে না। তবে উপযুক্ত চিকিৎসা নিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং রোগের মারাত্মক ঝুঁকি যেমন- পঙ্গুত্ব থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। যেহেতু এই রোগের কোনো দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নেই তাই পরিমিত জীবনযাপনই একমাত্র পন্থা।

চিকিৎসকের ভাষায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে হাড়েই ক্ষয় হবে,
এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। একে থামানোর কোনো উপায় নেই।
তবে নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের মাধ্যমে এই ক্ষয়ের পরিমাণ কমানো যায়, নিয়ন্ত্রণে আনা যায় ব্যথা।

যে কোন রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

……তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com
(Weight Reduction and Life-Style Medicine)

Leave a comment