চলুন, সুস্থ থাকতে ও ওজন কমাতে লো কার্বো, হাই প্রোটিন খাবার খাই…।।

..……………………….

“লো কার্বো হাই প্রোটিন ডায়েট” বর্তমানে এই ডায়েট নিয়ে বেশ কথাবার্তা চলছে আর ধারণা করা হচ্ছে যে, এই ডায়েট পদ্ধতি শরীরের জন্য সঠিক ডায়েট। আসুন দেখে নেই, কি এটা…।

ওজন কমাতে খাদ্যতালিকায় আমিষ বা প্রোটিনের পরিমান বাড়িয়ে দিন, আর শর্করা বা কার্বোর পরিমান কমিয়ে নিন।

কোন কোন খাবারে প্রোটিন বেশি থাকেঃ

মাছ, মাংস (চর্বি বাদ দিয়ে), ডিম, দুধ, দুধের তৈরি খাবার(তবে ফ্যাট ছাড়া), বিভিন্ন রকমের ডাল যেমন, মুগ, মসুর, ছোলা, এংকর ইত্যাদি, বিভিন্ন রকমের বাদাম ও বিচি।

এই লো কার্বো, হাই প্রোটিন ডায়েটে কিভাবে ওজন কমায়, চলুন দেখে নেই…।

১। যেহেতু শর্করা বা কার্বো কমানো হয়, সেহেতু রক্তে ইন্সুলিনের লেভেলও কমতে থাকে। ফলে শরীরে বেশি বেশি গ্লুকাগোন তৈরি করে। আর এই গ্লুকাগোনের কাজ হোল জমে থাকা ফ্যাট বার্ন করা। ফলে ওজন কমতে থাকে।

২। আবার যেহেতু প্রোটিনের পরিমান বাড়ানো হয়, আর প্রোটিনে থাকে এমাইনো এসিড, যা হজম বা বিপাকে শরীরকে প্রচুর শক্তি খরচ করতে হয়। আর বেশি শক্তি খরচ মানেই ওজন কমা।

আবার প্রোটিন বেশি খাওয়ার ফলে Pyy, GLP-1 হরমোন বাড়ে, ফলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে, আসে তৃপ্তি।

আবার, প্রোটিনে গ্রেলিন হরমোন কমে বলে খিধাও লাগে না। ফলে ঘন ঘন খাওয়া হয় না, আর ওজনও বাড়তে পারে না।

লো কার্ব ডায়েটে কি ভাত বাদ দিবেন?

বাঙালির ডায়েট চার্ট কি ভাত বাদ দিয়ে করা উচিত? ভাত খাবেন। তবে অল্প পরিমাণে। কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট খাবেন, যাতে ফাইবার বেশি; যেমন: লাল রুটি (ব্রাউন ব্রেড), ওটস, লাল চাল (ব্রাউন রাইস) ইত্যাদি। সন্ধ্যা সাতটার পর কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একদমই খাবেন না।

আমি উদাহরণ স্বরূপ ১ টি ডায়েট চার্ট দিচ্ছি, যেখানে প্রোটিন বেশি, আর কার্বো বা শর্করা কম…।

সকালের নাস্তাঃ

সকালের নাস্তায় ১ টি লাল আটার রুটি রাখুন। সাথে রাখুন, কম তেলে সবজি ভাজি, ডাল ভুনা, ডিম, ফ্যাট ছাড়া দুধ, পিনাট বাটার, চিনি ছাড়া বা কম চিনির চা।

দুপুরের খাবারঃ

দুপুরের খাবারে রাখুন ১ কাপ লাল চালের ভাত, সাথে মাছ/মাংস, সবজি, ডাল, সালাদ, লেবু, টক দই। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যদি বিভিন্ন ধরনের ডাল রাখতে পারেন, তাহলে তা কেবলমাত্র ওজন হ্রাস করতেই সহায়তা করবে না, পাশাপাশি আপনাকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিও সরবরাহ করবে। ঘরে তৈরি ডাল ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং ঘরে তৈরি অন্যান্য খাবারে সঙ্গে খাওয়া হলে ফলাফল আরও ভালো হয়। তাই প্রতিদিন খাবার তালিকায় এক বাটি ডাল যোগ করুন। এটা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি ওজন কমাতেও সহায়তা করবে।

নাশতা বা স্ন্যাক্সেঃ

নাশতায় (স্ন্যাক্সে) তো আর মাছ বা মাংস ভালো লাগে না, তখন চাই হালকা কিছু। তাই খেতে পারেন রকম পরিমান মতো বাদাম, কুমড়ার বিচি, ফ্লাক্স সিড, সানফ্লাওয়ার সিড, ছোলা বা বুট ভুনা, চটপটি, ডাল ভাঁজা (তেল ছাড়া, ঘরে ভাঁজা) ফলমূল।

প্রোটিন হজমের পরে যে টক্সিন বার হয়, তা শরীর থেকে দূর করে কিডনি। তাই অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে কিন্তু কিডনির উপরে বেশ চাপ পড়ে। তাই কিডনির সমস্যা থাকলে প্রোটিন গ্রহণও কমাতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

যে কোন রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

…………………..

……তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com
(Weight Reduction and Life-Style medicine)

Leave a comment