
মানুষ হিসাবে আমি যেমনই হই না কেন, মাঝে মাঝেই নিজের দেশের কথা ভাবি, ভাবি কি ধরণের পদক্ষেপ দেশের জন্য উপকারী হবে, সমাজকে উন্নত আর সুন্দর করবে এ নিয়ে। দেশ ছেড়েছি সত্যি তবে দেশের কল্যান চিন্তা আসলে ছাড়িনি।
আমার চোখে বাংলাদেশের সমাজে সব রকম গুন এবং দোষের সমাহার পাওয়া যাবে। ঠিক যেমনটা অন্য সব দেশের সমাজে। কিন্তু কোথায় যেন আমরা বারবার নিজের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠছি। এককভাবে কোনো বৈশিষ্ট্যকে এক নম্বর সমস্যা হিসাবে দেখানো গেলে হয়ত ভালই হত। কিন্তু আমার কাছে বারবারই মনে হয়েছে এরকম কোন একক সমস্যা চিহ্নিত করা খুবই কঠিন। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?
লক্ষ্য করুন, আমি যখন আমার সন্তানের বাবা তখন সত্য কথার গুরুত্ব আমার কাছে অনেক, বলতে গেলে বাধ্যতামূলক। অথচ আমি যখন বাজারে ক্রেতা বা বিক্রেতা, তখন মিথ্যার গুরুত্ব অনেক। এভাবে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা দ্বৈত নীতিতে পরিচালিত হই। অনেকে হয়ত বলবেন স্বার্থপরতার ফল এটা, হতে পারে! তবে স্বার্থপর কে না?
এক্ষেত্রে বেশি কাজের হবে যদি আমরা আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গি সম্পর্কে আন্তরিকভাবে বুঝতে পারি। ধরুন, অন্যকে পরামর্শ দেবার সময় আমরা খুবই সাধারণ এবং স্বাভাবিক। কারণ এক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিপাত স্বাভাবিক। কিন্তু যখন তা নিজেকে কেন্দ্র করে, তখন আমরা দারুণ ক্ষীণদৃষ্টির পরিচয় দেই। এটাই স্বাভাবিক, এবং তা খুব অস্বাভাবিক দোষের কিছুও নয়। আমাদের জানতে হবে, অন্যের চেহারা দেখে যতটা সহজে আমরা সাজাতে বা পরামর্শ দিতে পারব, নিজের চেহারার বেলায় তা মোটেও সে রকম সহজ নয়। নিজেকে সাজাতে চাই আয়না, যদিনা আমরা নিজের সাজের জন্য অন্যকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করি।
হ্যাঁ। খুব দ্রুত আরও উন্নত সমাজে রূপান্তরিত হতে আমাদের প্রত্যেকের কাছে এখন যা প্রয়োজন তা হল আয়না। নিজের চেহারা, চিন্তা, কাজ – সবকিছুই আয়নায় দেখার অভ্যাস করতে হবে। নিজের কাজকে যখন আয়নার মধ্যের মানুষটার কাজ হিসাবে দেখবো তখন দুটো লাভ হবে। এক, অন্যের চোখে স্বাভাবিক ভাবে আমি বা আমার কাজ কেমন তা বুঝতে পারবো। দুই, অন্যকে বিচার করার সময় বুঝতে পারবো, এটা শুধু অন্য কেউ নয়, এটা অন্য একজন “আমি”ও।
তাহলে আর দেরি কেন? আয়না আছে তো আপনার? দেখছেন তো নিজেকে ঠিকঠাক মত? যদি এতদিন না থেকে থাকে, আফসোস করবেন না ! ঝটপট আজই আয়না বসিয়ে নিন। দেখবেন সবাইকে নিয়ে কেমন তরতর করে উন্নতির পথে এগিয়ে যাবেন। ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন !

simple but important truth
LikeLike