চলুন, নিজের শরীরের সাথে নিজেই চিটিং করি…।।

…………….

কথাটা শুনে কি খুব অবাক হচ্ছেন? কি করবো বলুন, যে যুগ পড়েছে, মাছের তেলে মাছ না ভেঁজে আর কি করবো। যেমন কুকুর, ঠিক তেমনই মুগুর।।

মুটিয়ে যাবার ভয়ে, রিচ ফুড খাওয়া বাদ দিয়ে দিয়েছি। বার্গার, কাবাব, গ্রিল… খুব মিস করি। কি যে একটা শরীর, আমার শখ আহ্লাদ কিছুই দাম দেয় না। তাই আমি ঠিক করেছি, আমিও উচিৎ শিক্ষা দিব, এই শরীরটাকে। যেন একেবারে আক্কেল গুড়ুম হয়ে যায় শরীরটার।

তাই আপনাদেরও বলছি, শরীরের মায়া ত্যাগ না করে, তাকেই বোকা বানান। মানে মন চাইলে মাঝে মধ্যে রিচ ফুড খান। তবে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে খাবেন, যাতে শরীরটা কিছুই টের না পায়।

ধরুন আপনার খুব বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছা করছে। খেতেও পারবেন, তবে সাথে থাকতে হবে পর্যাপ্ত সালাদ, যাতে থাকবে, টমেটো, শশা, লেটুস, বাঁধা কপি, স্পিনাচ, ক্যাপসিকাম, কাচামরিচ, পেয়াজ, লেবু ইত্যাদি।
সাধারণত, বিরিয়ানির সাথে সালাদ তো খাওয়াই হয়। তবে চেষ্টা করতে হবে অবশ্য অবশ্যই যেন পাঁচ মিশালি সালাদ থাকে। কারণটা বলছি…

সালাদের সবজিগুলোর মধ্যে আছে প্রচুর ফাইবার বা খাদ্য আঁশ। আমরা অনেকেই জানি না, খাদ্য আঁশ কি এবং এটা শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়। খাদ্য আঁশ বা ফাইবার বলতে আমরা উদ্ভিদজাত খাদ্যের ছাল, পাতা, খোসাসহ বিভিন্ন সবজি, ফল বুঝি।

সাধারণভাবে আঁশজাতীয় খাবার মানুষের খাদ্যনালীতে হজম হয় না। এর কারণ হলো, এগুলো হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম আমাদের পরিপাকতন্ত্রে নেই।

এদের আঁশ বা ফাইবার খাদ্যনালী থেকে স্পঞ্জের মতো কোলেস্টেরল এবং চর্বিকে শুষে নেয়, পরবর্তীতে মল মুত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। ফলে শরীরের কোনো অংশে নতুন করে, চর্বি বা মেদ জমতে পারে না।

খাদ্যের আঁশ অংশটুকু হজম না হওয়ার কারণে এগুলো খাদ্যনালীর বেশকিছু জলীয় অংশ শোষণ করে ধরে রাখে এবং এই জলীয় পদার্থসহ এগুলো মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। এতে মল নরম হওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, কোলন ক্যান্সারও প্রতিরোধ হয়। আর এজন্য পানি পান করতে হবে প্রচুর, যাতে ফাইবার গুলো পানি সহ বের হয়ে যেতে পারে। যদি ফাইবারের সাথে পর্যাপ্ত পানি না পান করা হয়, তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে।

ফলে যখন আপনি বিরিয়ানির সাথে সালাদ খাবেন, তখন বিরিয়ানির তেল চর্বিগুলো, সালাদের এই ফাইবারগুলোর সাথে মলের সাথে বেরিয়ে যায়। আর যদি কোন সালাদ না খান, তাহলে সেই বিরিয়ানির সব তেল বা চর্বি শরীরে জমতে থাকবে।
তবে এই সালাদ কিন্তু, আপনার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা ফ্যাটগুলো এভাবে কমাবে না। জমা ফ্যাট কমানোর জন্য দরকার হাঁটা চলা বা ব্যায়াম। সালাদ শুধুমাত্র উপস্থিত খাবারের তেল চর্বিই মলের সাথে বের করে দিবে। তাই রেগুলার হাঁটা বা ব্যায়াম কোনভাবেই বাদ দেয়া যাবে না।

তাছাড়া, আমাদের খাদ্যনালীতে রয়েছে কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া। সুখবর হলো, খাদ্য আঁশ এই ব্যাকটেরিয়াগুলোর লালনে, একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা কোলন ক্যান্সার ঠেকাতে যা অত্যন্ত কার্যকরী।

আর ঠিক এই নিয়ম খাটিয়ে আপনি যে কোন রিচ ফুডের মজা নিতে পারেন। তাই বলে প্রতিদিন ইচ্ছামতো রিচ ফুড খাওয়া যাবে না। মাঝে মাঝে পরিমান মতো খেতে পারবেন।

কি? কেমন হোল বুদ্ধিটা…। শরীর যেমন বুনো ওল, আমিও তেমনি বাঘা তেতুল…

মূল কথাঃ

যেকোনো তেল/ চর্বি/ রিচ ফুড খেলে, সাথে অবশ্যই অবশ্যই পাঁচমিশালি সালাদ খেতে হবে ও খাবার ১ ঘণ্টা পর থেকে প্রচুর পানি পান করতে হবে।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

………………..

……তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com
(Weight Reduction and Life-Style Medicine)

Leave a comment