চুইংগাম… হতে পারে আপনার একজন পরম বন্ধু…

চুইংগাম চাবাতে কে না ভালবাসে। ছোটবেলায় এই চুইংগাম দিয়ে কত দুষ্টুমি না করেছেন। দাঁতের ক্ষতি হবে বলে মায়ের বকুনিও খেয়েছেন প্রচুর। তারপরও চুইংগামকে বড্ড ভালবাসতেন তখন। অথচ আপনি নিজেও জানেন না, চুইংগাম আপনার অনেক অনেক উপকার করে থাকে। তবে সুস্থতার কথা চিন্তা করে, চিনি বিহিন চুইংগাম বেছে নেয়া উচিৎ।

চলুন জেনে নেই চুইংগাম আমাদের কি কি উপকার করে থাকে…।

১। শরীরের ওজন কমাতে পারেঃ

চুইংগাম চাবালে অতিরিক্ত খিধা কমে যায়, এতে খাওয়া কম হয় এবং ওজন কমে। তাছাড়া যখনই আপনার অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে মন চাইবে, তখনই আপনি একটি চুইংগাম খেয়ে, নিজেকে বিরত রাখতে পারেন।

চুইংগাম খাওয়ার সময় প্রতি ঘন্টায় কম-বেশি প্রায় ১১ ক্যালরি বার্ন হয়। তবে চিনি কম রয়েছে এমন চুইংগাম খাবেন, না হলে কিন্তু ওজন কমার পরিবর্তে দুম করে বেড়ে যেতে পারে।

৩। গালের মেদ এবং ডাবল চিন কমাতে।

৪। কাজের প্রতি মনোযোগ বারায়ঃ

অনেক সময়েই আমাদের কাজে মন বসে না। একঘেয়ে লাগে। কাজ করতে করতে ঘুম পায়। অর্থাত্‌, কাজের দিক থেকে সমস্ত মনোযোগ চলে যায়। কাজের প্রতি আমাদের সেই মনোযোগ বা একাগ্রতা ফিরিয়ে আনে চুইংগাম।

গবেষকেরা বলে থাকেন, মাড়ির সঙ্গে আমাদের মুডের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই চুইংগাম চিবানোর সময়ে কোনওভাবেই আমাদের উপর কোনও কাজের চাপ পড়ে না

৫। পেটের অসুখ থেকে মুক্তি মেলেঃ

চুইংগাম চাবানোর ফলে, হজমের জন্য উপকারি রসগুলো দেহের ভিতরে বের হয়, যা অদরকারী অংশগুলোকে শরীর থেকে বের করে দেয়।

৬। হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটেঃ

চুইংগাম চাবানোর সময় মুখে থুতুর পরিমাণ বাড়ে, যে কারণে অ্যাসিডিটি এবং বারে বারে ঢেঁকুর ওঠার মতো সমস্যা দূর হয়ে থাকে। এতে করে খাবার হজম হতেও সময় লাগে না। ফলে বদহজমের মতো সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

৭। খাদ্যনালীর এসিডিটি কমায়ঃ

চুইংগামের কারণে মুখের লালা আরও ক্ষারীয় এবং আরো ঘন হয়ে উঠে। ফলে, এসিড অনেকাংশে নিরপেক্ষ হয় এবং প্রদাহ কমায় ।

৮। ব্রেইনের ক্ষমতা বাড়েঃ

চুইংগাম খাওয়ার সময় হার্ট রেট বেড়ে যায়, ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত ব্রেইনে সহজে পৌছায়, আর ব্রেনের ক্ষমতা বহুগুন বেড়ে যায়। এর ফলে তার মানসিক সুস্থতাও অনেকাংশে ঠিক থাকে।

৯। দাঁতের ক্যাভিটি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়ঃ

ডেন্টিস্টরা বলেছেন, কম চিনিযুক্ত চুইংগাম খাওয়া অনেক সময় টুথপেস্ট এবং মাউথ ফ্রেশনারের থেকে ভাল কাজ করে থাকে। আর এই সাধারণ কাজে, দশ মিনিটের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া হত্যা করতে পারে। মূলত, এটি আপনার মুখের মধ্যে লালা প্রবাহ বজায় রাখতে কাজ করে, যা দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যকনা বের করে দেয় এবং কিছু কিছু চুইংগাম দাঁতের ক্ষয় সৃষ্টি কারি জীবাণুও ধংস করতে পারে।

১০। বিমান ভ্রমনে ব্যাবহৃত হয়ঃ

বিমান ভ্রমনে সাধারণত এয়ারপোর্টে চুইংগাম দেয়া হয়। চুইংগামে লালা উৎপাদন ও চোয়ালের চলাচল, আপনার কানের চাপকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।

১১। দুশিন্তা ও স্ট্রেস কমায়ঃ

দেখা গেছে, চুইংগাম চাবালে স্ট্রেস হরমোন কোর্টিসলের পরিমান কমতে থাকে। তাই যেকোনো দুশিন্তা ও স্ট্রেসে চুইংগাম চাবাতে পারেন।

১২। চুইংগাম মুখের ফ্রেশনেস বজায় রাখে।

১৩। চুইংগাম দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করে।

১৪। চুইংগাম ধূমপানের আসক্তি কমাতে পারে।

তবে মাত্রাতিরিক্ত চুইংগাম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। চেষ্টা করবেন, চুইংগাম যেন চিনি বিহীন হয়।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

……………

…… তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com

Leave a comment