আমাদের খাদ্যনালীকে দ্বিতীয় ব্রেইন বলা হয়। আর এই নালীকে সুস্থ রাখতে পারলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়। মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় খাদ্যনালীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যেহেতু খাবারের সাথে খাদ্যনালীতে নানা ধরনের জীবাণুও ঢোকে, খাদ্যনালীর আবরণের একটা কাজ হল, এগুলোকে শরীরে ঢুকতে না দেয়া। এছাড়া খাদ্যনালীর ভেতরে রয়েছে কিছু উপকারি ব্যাকটেরিয়া। যাদের কাজ হল, শরিরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে চাঙ্গা রাখা। এদেরকে বলা হয় প্রো-বায়োটিক বা বন্ধু ব্যাকটেরিয়া। অাবার প্রো-বায়োটিক আছে, এমনসব খাবার খেয়েও আমরা এই উপকারি ব্যাকটেরিয়াগুলোকে সাহায্য করতে পারেন। এদের মধ্যে টক দই অন্যতম। আর তাতে যদি চিনি ও ফ্যাটের পরিমান কম থাকে, তাহলে তো কথাই নেই।
টক দইয়ে থাকে অনেক উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এবং শরীরের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে বাড়িয়ে হজম শক্তি বাড়ায় বা ঠিক রাখে। তাই এটি পাকস্থলী বা খাদ্যনালীর জ্বালাপোড়া কমাতে বা হজমের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে| টক দই শরীরে টক্সিন জমতে দেয় না। ফলে খাদ্যনালি পরিস্কার থাকে। যা শরীরকে সুস্হ রাখে ও বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে।
আবার দেখা যায় যে, অনেকেই দুধ খেতে পারেন না। অর্থাৎ অনেকেরই দুধে থাকা ল্যাকটোজ সহ্য হয় না বা সহজে হজম হতে চায় না। তারা অনায়েসেই দুধের পরিবর্তে লো ফ্যাট, সুগার ফ্রি টক দই খেতে পারেন। কারন দুধে থাকা ল্যাকটোজ, দইয়ে ল্যাকটিক এসিডে চেঞ্জ হয়, যা হজমে সহায়তা করে। আবার এই ল্যাকটিক অ্যাসিডের কারনে কোষ্টকাঠিন্য দুর হয় ও ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে। এটি কোলন ক্যানাসার রোগীদের খাদ্য হিসাবে উপকারী।
তাছাড়া টক দইয়ে দুধের প্রায় সকল উপাদানই বিদ্যমান থাকে, যেমন, আছে প্রচুর পরিমান প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, রাইবোফ্ল্যাভিন, ভিটামিন B6 এবং ভিটামিন B12 । যা হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক। মহিলাদের টক দই বেশী প্রয়োজন, কেননা তারাই ক্যালসিয়ামের অভাবে বেশী ভোগেন।
কিভাবে খাবেনঃ
আপনি নানা ভাবে এই টক দই খেতে পারেন, যেমন,
. বোরহানি বানিয়ে খেতে পারেন, (টক দই + গোল মরিচ + জিরা + ধনে পাতা + পুদিনা পাতা + বিট লবন + লেবুর রস মিশিয়ে)
. টমেটো ও শশার সালাদে টক দই মিশিয়ে খেতে পারেন, যেমন রাইতা।
. বিভিন্ন ফলের সালাদেও টক দই মিশিয়ে খেতে পারেন।
. বিভিন্ন ফলের সাথে টক দই মিশিয়ে স্মুথি বানিয়ে খেতে পারেন।
যেভাবেই টক দই খাওয়া হোক না কেন মূল কথা হচ্ছে এটি ভীষন উপকারি। নিয়মিতভাবে টক দই খেলে আমাদের পেট ও শরীর থাকবে অনেক সতেজ ও স্বাভাবিক। আর টক দই খাওয়ার কয়েকদিনের মধেই আপনি এর সুবিধা গুলো নিজেই দেখতে পাবেন।
যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
……তিনা শুভ্র
