ওজন কমানোর কথা চিন্তা করলেই প্রথমে আমরা দুধ, ডিম খাওয়া বন্ধ করে দেই। আমাদের ধারনা, ডিমের কুসুমে অনেক ফ্যাট থাকে, যা আমাদের ওজন বাড়িয়ে দিবে। ধারনাটা অনেকাংশে ভুল। কারন ডিমের কুসুম শরিরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এর পরিমান কমিয়ে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরল এর পরিমান বাড়িয়ে দেয়। আবার কোন কোন বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, সকালে খালি পেটে নাস্তায় দুটো সেদ্ধ ডিম খেলে, পেটের মেদ দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন ডিম খেলেও তা সেদ্ধ কিংবা ডিমের পানি পোচ করে খান। এতে বাড়তি তেল শরিরে যাবে না, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
আজ আমরা আলাপ করবো, ডিম কিভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে…
১। ডিম হচ্ছে উচ্চ মানের প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। আর প্রোটিনের কাজই হল খিদার অনুভুতি কমিয়ে দেয়া। ডিম খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে, তাই ক্ষুধা কম লাগে। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার চাহিদা কমে, তাই ওজনও কমে। তাছাড়া উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন খেলে মেটাবোলিজম বাড়ে এবং ক্যালোরি বার্ণ বেশি হয়।
২। ডিমের কুসুম খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় বলে অনেকে মনে করেন। তবে আপনি হয়তো জানেন না ডিমের কুসুম, শরিরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমান বাড়াতে সাহায্য করে। তবে অবশ্যই নিয়ম মেনে আপনাকে ডিম খেতে হবে।
৩। ডিমে কার্বো খুব কম থাকে। কম কার্বযুক্ত খাবার খেলে তা ওজন কমানোকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে।
৪। ডিমে ক্যালোরিও তুলনামূলক কম থাকে। তাই এটি শরীরে ক্যালোরির ঘাটতি তৈরি করতে পারে। ফলে ওজন কমতে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসারে, দিনে সর্বোচ্চ ৩টি পর্যন্ত ডিম খাওয়ার কোনো সমস্যা নেই। তবে আপনি কোনোরকম ক্রনিক অসুখে ভুগলে ডিম খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ওজন কমাতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ডিম রাখতে পারেন। তবে ভুনা ডিম বা ভাজি নয়, ডিম খান এই তিনটি উপায়ে।
আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইলে কীভাবে ডিম খাবেন….
১। সেদ্ধ করে খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত সময় ধরে সেদ্ধ করা যাবে না।
২। হাঁড়িতে পানি নিয়ে তাতে অল্প ভিনিগার মিশিয়ে নিন। পানি ফুটে উঠলে তাতে ডিম ভেঙে ছেড়ে দিন। কিছুক্ষণ পরই পোচটিকে আলতো করে তুলে নিন পানি থেকে।
৩। প্রতিদিন সালাদের সাথে, সেদ্ধ ডিমের কুচি, গোলমরিচ ও লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
৪। ডিমের সঙ্গে ওটমিল মিশিয়ে সকালের নাস্তায় খেতে পারেন। ওটমিল শরীরে বাড়তি কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড জমার পথে বাধা দেয়। আর ডিম জোগায় প্রোটিন। ওটমিল ও ডিম একসঙ্গে খেলে মেদ বাড়বে না।
তাই ওজন কমানোর ডায়েট অবশ্যই ডিম রাখুন।
তবে যারা হার্টের রোগী বা কোলেস্টোরেল সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন, তাদের জন্য দরকার চিকিৎসক পরামর্শ।
যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
……তিনা শুভ্র ।
