ওজন কমাতে বিজ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ আবিষ্কার “হিট (HIIT) ব্যায়াম”, যার মধ্যে আছে ওজন কমানোর বিস্ময়কর সমাধান……

আধুনিক যুগে, মানুষ শুধু ম্যাজিক চায়, যার মাধ্যমে অতি অল্প কষ্টেই সে কাংখিত লক্ষে পৌছাতে পারে। হিট ব্যায়াম হল, ওজন কমানোর জন্য তেমনই এক আশ্চর্যকারী ব্যায়াম।

ওজন কমানোর জন্যে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তীব্র শরীরচর্চা বা ব্যায়াম অনেক বেশি কার্যকর। এমনটাই দেখা গেছে একটি গবেষণায়। হাই ইনটেনসিভ ইনটারভেল ট্রেনিং বা হিট (HIIT) নামে পরিচিত এই ব্যায়ামের ফলে ওজন কমার হার দীর্ঘ সময়ের ব্যায়ামের তুলনায় বেশি।
হিট ব্যায়াম করার সময় শরীর কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে ফ্যাট থেকে শক্তি ব্যবহার করে। এই ব্যায়ামের মাধ্যমে অনেক ক্যালোরি বার্ন করা যায়। প্রতিদিন হিট এক্সারসাইজ করলে আপনার শরীর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ফ্যাট-বার্নিং মুডে থাখবে।

কিভাবে করতে হবেঃ

প্রথমেই শরীরটাকে ভালো করে ওয়ার্ম আপ করে নিতে হবে। ৪/৫ মিনিট হালকা হাঁটাহাঁটি করে শরীরটাকে চালু বা ওয়ার্ম আপ করে নিন। ওয়ার্ম আপ করে নিলে, এই হিট ব্যায়াম করতে আপনার মোটেও কষ্ট হবে না। আর যদি ওয়ার্ম আপ না করেন, তাহলে এই ব্যায়াম করতে আপনি হাপিয়ে উঠবেন এবং ঠিক মতো চালিয়ে যেতে পারবেন না। তাই হিট ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই শরীরটাকে চালু কর নিন বা ওয়ার্ম আপ করুন।

এরপর যত জোরে পারেন দৌড় দেবেন। মাত্র ৩০/৪০ সেকেন্ডে দৌড়ানোর পর ১৫/২০ সেকেন্ড আস্তে আস্তে হাঁটুন। আবার ৩০/৪০ সেকেন্ডে দৌড় দেয়ার পর ১৫/২০ সেকেন্ড আস্তে আস্তে হাঁটুন। এভাবে ৫/৭ মিনিট চালিয়ে যাবেন।

কেউ দৌড়াতে না পারলে, ৩০/৪০ সেকেন্ড খুব খুব দ্রুত হাঁটুন, পরে ১৫/২০ সেকেন্ড আস্তে আস্তে হাঁটুন। আবার ৩০/৪০ সেকেন্ড খুব খুব দ্রুত হাঁটার পর ১৫/২০ সেকেন্ড আস্তে আস্তে হাঁটতে হবে।

ঠিক একইভাবে, সাইক্লিং, জগিং, ট্রেড মিলে হাঁটা বা অন্য যেকোনো ব্যায়াম করতে পারেন।

হিট ব্যায়ামে দৌড় বা হাঁটাটা এতই দ্রুত হবে যেন মনে করতে হবে, কোন পাগলা কুকুর আপনাকে তাড়া করেছে। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, কত দ্রুত হাঁটতে হবে, যেন হার্ট তার সর্বোচ্চ পরিশ্রম করে। পরবর্তীতে আবার ধীরে ধীরে হাঁটতে বা দৌড়াতে হবে।

প্রথম প্রথম এই ব্যায়াম করতে কষ্ট হতে পারে। অল্প অল্প করে শুরু করুন, আর করতে যেয়ে বেশি খারাপ লাগলে ব্যায়াম করা বন্ধ কর দিন। চাইলে ব্যায়াম শুরুর আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

হিট ব্যায়ামের উপকারিতাঃ

১। হিট ব্যায়ামের ফলে শরীরে হরমোন ও বিভিন্ন উপাদান উত্তেজিত হয়, যার ফলে চর্বি পোড়ানোর ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং অনুশীলনের পর কয়েক ঘণ্টা ধরে, আপনার শরীরের মেটাবলিক রেট অনেক বেশী থাকবে। ফলে এই ব্যায়াম অতিরিক্ত আরও কিছু মেদ কমাতে সাহায্য করে।

২। এই ব্যায়ামে শরীরের মাসল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আর মাসল যত বেশি হবে, ফ্যাটও তত বার্ন হবে।

৩। যাদের হাই ব্লাড প্রেশার আছে তাদের জন্য এই ব্যায়াম খুব এ উপকারী।

৪। এই ব্যায়াম ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ায় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিক প্রতিরোধ এ সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আপনার শরীরের গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রন এ থাকে।

৫। এটি আপনার বয়স কমিয়ে রাখতে এবং দীর্ঘায়ুর সম্ভাবনা বাড়ায়।

বর্তমান সময়ে কাজের ব্যাস্ততায় আমরা ব্যায়াম করার সময়ই পাই না। এক্ষেত্রে আপনি হিট ব্যায়াম কে বেছে নিতে পারেন।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

…… তিনা শুভ্র ।
( Weight Reduction and Life-Style Medicine.)

Leave a comment