প্যানিক অ্যাটাক কি, চলুন জেনে নেই…।


যে কোন সময় হঠাৎ করে, সামিয়ক ভাবে, তীব্র মাত্রায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়াকে মূলত প্যানিক অ্যাটাক বা আতঙ্কগ্রস্থতা বলে। এই আতঙ্কগ্রস্থ হবার নির্দিষ্ট কোন সময়কাল থাকে না। সাধারণত প্রতিটি প্যানিক অ্যাটাকের স্থায়ীত্বকাল দশ থেকে পনেরো মিনিটের মতো হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা আধঘন্টারও অধিক হতে পারে। যে পরিস্থিতির জন্য আতঙ্কগ্রস্থতা দেখা দেয়, সেই পরিস্থিতি থেকে নিষ্কৃতি না পেলে আক্রান্ত ব্যক্তি আরও বেশি সময় ধরে আতঙ্কগ্রস্থ বোধ করতে থাকে। প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সে সময় থামানোর চেষ্টা করা হলে অনেক সময় তারা হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। এই আতঙ্কগ্রস্থতা অনেক ক্ষেত্রে কয়েক ঘন্টার মধ্যে এমনিতেই কমে যায়। তবে সবার ক্ষেত্রে এর প্রভাব সমান ভাবে কাজ করবে এমন নয়।
এ রোগে আক্রান্তের মনে হয়, এখনই আমি ‘মারা যাবো’ বা ‘জ্ঞান হারাবো’। মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে সবচেয়ে বেশি যে ভাবনাটি দেখা যায় সেটি হচ্ছে- হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা হাঁই ব্লাড প্রেশার।
রোগীর মনে হয়, তার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বুক ধড়ফড় করা, হাত-পা অবশ হয়ে আসা, মুখ শুকিয়ে আসা, গিলতে কষ্ট হওয়া , হাত-পা কাঁপা, প্রচুর ঘাম হতে পারে, মাথা ধরা, বুকের তীক্ষ্ণ বা চাপা ব্যথা,

বস্তুত প্যানিক অ্যাটাক শরীরের কোনো রোগ বা সমস্যা নয়। এটি একটি মানসিক রোগ। দেখা যায়, রোগীরা সমস্যা নিয়ে বারবার বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে যান, ইসিজি, ইকো থেকে শুরু করে হার্টের এনজিওগ্রাম পর্যন্ত করে ফেলেন।

কোনো পরীক্ষাতেই কোনো কিছু ধরা না পড়াতে, অনেকে ভাবেন- ডাক্তার মনে হয় ঠিক মতো রোগটি ধরতে পারছেন না। কিংবা পরীক্ষাগুলোর রেজাল্ট হয়তো ঠিক মতো আসছে না। অনেক ডাক্তারও রোগীকে বলে দেন, ‘আপনার কোনো রোগ নেই’। আর এতে রোগী বা রোগীর আত্মীয়-স্বজন আরো বেশি দ্বিধার মধ্যে পড়ে যান। এমনকী অনেকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পর্যন্ত চলে যান।

এটি যে একটি মানসিক রোগ, অনেকেই তা মেনে নিতে চান না। কিংবা মানসিক ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হতে লজ্জা বো ধ করেন।
প্যানিক এটাকে প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ, সাইকোথেরাপি এবং রিলাক্সেশান এক্সারসাইজ দেয়া হয়ে থাকে। তবে যে মুহূর্তে প্যানিক অ্যাটাক হবে , সে সময়ের জন্য খুব সহজ একটা সমাধান হল, রিলাক্সেশান এক্সারসাইজ বা ব্রিথিং এক্সারসাইজ করা। এ এক্সারসাইজএ নাক দিয়ে ৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে দম নিতে হবে এবং ৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে দম ছাড়তে হবে। এভাবে বেশ কয়েকবার করলেই অনেকটা আরাম পাওয়া সম্ভব।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

……। তিনা শুভ্র ।

Leave a comment