শিশুদের অতিরিক্ত ওজন এবং তা নিয়ে কিছু সতর্কতা…।।

গুল্লুমুল্লু, গোলগাল, নাদুস নুদুস বাচ্চা সবার খুবই পছন্দ আর এধরনের বাচ্চারা খুবই আদুরে, মায়াবী ও লোভনীয় হয়। তাই সব বাবা মায়েরাই তাদের বাচ্চাদের নাদুস নুদুস বানানোর জন্য কত কিছুই না করে থাকেন। দেখা যায়, একসময় সেই বাবুটা ঠিকই গুল্লু মুল্লু হয়ে উঠেছে।
বাবা মায়েরা ঠিক জানেনও না যে, তারা না জেনে, না বুঝে বাচ্চার কত বড় ক্ষতি করে ফেলেছেন। হয়তো কথাটা শুনে অবাক হচ্ছেন, যে ক্ষতি আবার হল কিভাবে? দেখে নিন কিভাবে,

১। এই বাচ্চাগুলো দেখা যায়, অপ্রয়োজনীয় এবং অস্বাস্থ্যকর খাবারে অভ্যস্ত হয়ে উঠে, যা তারা পরবর্তীতে আর বাদ দিতে পারে না।
কেননা বাবা মায়েরা তাদের ওজন বাড়ানোর জন্য ঘন ঘন খাবার খেতে দেন, অতিরিক্ত ফ্যাটি খাবার যেমন, চকোলেট, মিষ্টি, মাখন, পনির, দুধের সর বা ক্রিম, অতিরিক্ত ভাত/রুটি/কুকিজ/কেক ইত্যাদি খাবার খাইয়ে খাইয়ে তাদের অভ্যাসটাই বদলে ফেলেন।
২। আর একবার ওজন বেড়ে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা পরবর্তীতে কমানো সম্ভব হয়ে উঠে না। আর তখনই দেখা দেয় নানান জটিলতা। যেমন, অতিরিক্ত স্বাস্থ্যবান শিশুরা যেসব জটিলতর শারীরিক সমস্যায় পড়ে তার মধ্যে অন্যতম হল-

. কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (প্রধানত হার্টের রোগ)।
. টাইপ ২ ডায়াবেটিস।
. ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, কিডনি, ওভারি এবং এনডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার।
. হাঁপানি বা শ্বাস কষ্ট।
. উচ্চ রক্তচাপ এবং হাই কোলেস্টেরল।
. জয়েন্ট সমস্যা, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা।
. বাত ও নানা রকম শারীরিক অক্ষমতা।
. বিষণ্ণতা ও নানান মানসিক রোগ।
. সিজোফ্রেনিয়া।

তাহলে এ ক্ষেত্রে করনীয় কি??

শিশুর ওজন কমানো খুব স্পর্শকাতর একটি বিষয়। কারণ, এটা আপনার শিশুর বেড়ে ওঠার সময়। এ সময়ে যদি আপনি আপনার শিশুর ওজন কমাতে চান, তাহলে তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। শিশুর বেড়ে ওঠা বলতে কিন্তু শুধু শারীরিক বৃদ্ধিকেই বোঝায় না। শারীরিক বৃদ্ধির সঙ্গে মানসিকভাবে বেড়ে ওঠাও বোঝায়। তাই ওজন কমানোর নামে যদি আপনি শিশুর খাবার কমিয়ে দেন, তাহলে সেটা হিতে বিপরীতও হতে পারে। এতে আপনার আদরের সন্তানের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
শিশুর ওজন যা আছে সেটাই ধরে রাখতে হবে। মানে এখন যে ওজন আছে, সেটা যেন আর বেশি না হয়। কারণ, শিশুরা ধীরে ধীরে লম্বা হবে এবং এই বর্তমান ওজনটাই একসময় তাদের উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে যাবে।

আর যদি ওজন কমাতেই হয়, তাহলে মাসে সর্বোচ্চ ১ থেকে ২ কেজি কমানো যাবে। তার বেশি কমানো উচিত নয়। আর তা হতে হবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো।

কিভাবে শিশুর ওজন কমাবো, তা জানতে চোখ রাখুন ….

(চলবে)
……তিনা শুভ্র ।

Leave a comment