……………
ধর্ম বা সাংস্কৃতিক কারনে, আমারা অনেকেই বেশ লম্বা সময় না খেয়ে থাকি। আবার অনেকে ওজন কমানোর জন্যও কিছুটা সময় না খেয়ে থাকেন। এই যে আমরা রোজা রাখি বা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকি, এতে আমাদের শরীরে কি হয় বা এই না খেয়ে থাকা, শরীরের জন্য কতটা গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে আজ আলোচনা করবো।
আমাদের শরীরে সবসময়ই ভাংগা গড়ার কাজ চলছে, আর তাতে অনেক আবর্জনাও তৈরি হয়। সবসময় এই আবর্জনাগুলো শরীর বের করে দিতে পারে না। ফলে কোষের মধ্যে এই আবর্জনা জমতে থাকে, যা পরবর্তীতে ক্যান্সার সহ নানান জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। আর এই আবর্জনাগুলো বের করে দেবার একটি আদর্শ উপায় হোল বেশ লম্বা সময় না খেয়ে থাকা বা রোজা রাখা। আমরা যখন অনেকক্ষণ (দিনের একটা বড় অংশ) না খেয়ে থাকি, তখন শরীরের সুস্থ কোষগুলো, নিজেই নিজের আবর্জনা বা অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে। ফলে শরীর পায় এক নবজীবন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই প্রক্রিয়াকে বলে অটোফ্যাগি। এখানে অটো অর্থ নিজে এবং ফ্যাগি অর্থ খাওয়া। অটোফ্যাগি হোল আমাদের শরীরের একধরনের প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে, কোষগুলো তার বর্জ্যকে ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করে থাকে। সাথে মৃতপ্রায় ও ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে মেরে ফেলে সেখানে নতুন কোষের গঠন করে।
এই প্রক্রিয়া সেই সব কোষেই শুরু হয়, যখন পুষ্টির অভাবে কোষের বৃদ্ধি থেমে যায় এবং প্রাণশক্তি ফুরিয়ে যেতে শুরু করে। সাধারণত রোজায় এই প্রক্রিয়া দেখা দেয়। রোজায় পুষ্টির অভাবে কোষ নিজের মধ্যকার বর্জ্য ব্যবহার করে। ফলে কোষের ভেতরটা পরিষ্কার হয়ে যায়। আর পুরো ব্যাপারটা ঘটে আটোফ্যাগির মাধ্যমে। আপাতদৃষ্টিতে, অটোফ্যাগি অস্বাভাবিক মনে হলেও, এটি জীব দেহের একটি স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক সুরক্ষা পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শরীর ক্ষুধা, ব্যকটেরিয়া ও ভাইরাস মোকাবেলার মতো কাজগুলো করে থাকে।
অটোফ্যাগি রোজার উপকারিতার একটি দিক মাত্র। রোজাকে মহান আল্লাহ আমাদের জন্য রহমত হিসাবে দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক কালে বিজ্ঞান বলছে মাঝে মাঝে না খেয়ে থাকা শরীরে জন্য বেশ ভালো। এতে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা নিজে থেকে সমাধান হয়ে যায়, এমনকি ক্যান্সারের মত প্রাণঘাতী রোগ থেকেও রক্ষা পেতে পারে আমাদের দেহ।
যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
……তিনা শুভ্র ।।
