আপনি কি দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার সহ্য করতে পারেন না, খেলে কষ্ট হয় ?? জেনে নিন কি করবেন …

দুনিয়াতে দুধকে ধরা হয় আদর্শ খাদ্য হিসেবে। দুধে থাকে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই জরুরি। কিন্তু অনেকেই দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার সহ্য করতে পারেন না। দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণের ৩০ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে নানান লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। যেমন বমি বমি ভাব, পেটের ভেতর অস্বস্তি, কামড়ানো, পেট ফাঁপা বা গ্যাস, ডায়রিয়া ইত্যাদি। এই লক্ষণগুলো ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় প্রকাশ পেতে পারে।
দুধে থাকে ল্যাকটোজ নামক এক প্রকারের শর্করা। এই শর্করা হজম করার জন্য একটি বিশেষ ধরনের এনজাইমের প্রয়োজন হয়, যার নাম, ল্যাকটেজ। সাধারণত মানবদেহেই এই এনজাইম তৈরি হয়। কিন্তু কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এই এনজাইম উৎপাদনের হার খুবই কম। যাদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে এই এনজাইম তৈরি হয় না, তাদের ল্যাকটোজ নামক শর্করাটি ঠিক মতো হজম হয় না। আর তখনই দেখা দেয় নানান উপসর্গ। এই ধরনের মানুষদের বলা হয় ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট।

তবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণে বিরতি নেয়াই হল এর মূল চিকিৎসা। রোগীকে জানতে হবে, কোন কোন খাবারে কী মাত্রায় ল্যাকটোজ মানে দুধ রয়েছে এবং তা এড়িয়ে চলা।
ল্যাকটোজ ইন্টলারেন্সের সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হল ডায়েট থেকে দুধ এবং দুধের তৈরি খাবার একদম কমিয়ে দেয়া বা বাদ দিয়ে দেওয়া। কেননা শরীরে ল্যাকটোজ বাড়ানোর কোন ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো পাওয়া যায়নি।
খাদ্যতালিকা থেকে দুধ একেবারে বাদ দেওয়ার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিন, আসলেই আপনার ল্যাকটোজ ইন্টলারেন্স আছে কি না। হয়তো এ মুহূর্তে যা হচ্ছে তা নিতান্তই সাময়িক। এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ অতি জরুরি।
বর্তমান বাজারে ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ পাওয়া যায়, যেটা আপনি খুব সহজেই পান করতে পারবেন। কারণ এই প্রকারের দুধ থেকে ল্যাকটোজ সরিয়ে ফেলা হয়। আর এটিও গরুর দুধের মতোই সমান পুষ্টিসম্পন্ন।

তবে খাদ্যতালিকা থেকে দুধ একেবারে বাদ দেওয়ার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিন, আসলেই আপনার ল্যাকটোজ ইন্টলারেন্স আছে কি না। হয়তো এ মুহূর্তে যা হচ্ছে তা নিতান্তই সাময়িক। এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ অতি জরুরি।

জেনে রাখুন, ল্যাকটোজসমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে দুধ বা দুধের তৈরি যেকোনো খাবার, যেমন, আইসক্রিম, মাখন, পনির, পুডিং, কাস্টার্ড, দই, মিষ্টি, ফিরনি-পায়েস ইত্যাদি। তবে বর্তমানে বাজারে এসব খাবারের গায়ে লেখা থাকে, যে ওগুলো ল্যাকটোজ ফ্রি কি না। তাই দুধ বা দুধ জাতীয় খারার কেনার আগে প্যাকেটের লেখা দেখে কিনুন। আর প্যাকেটে যদি কিছু লেখা না থাকে, সেক্ষেত্রে এসব খাবারের পরিমাণ যথাসম্ভব কমিয়ে দিন বা বাদও দিতে পারেন।

এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্‍সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
……… তিনা শুভ্র ।।

Leave a comment