আপনার ত্বক বা স্কিন কি খুব ড্রাই বা শুষ্ক লাগে? অনেক চুলকায়?কি করবেন, জেনে নিন……

………………………..

শুষ্ক ত্বক বা ড্রাই স্কিন নিয়ে আমাদের ভোগান্তির শেষ নাই। নানা কারণে, বিভিন্ন বয়সে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা ভাষায় একে জেরোডারমা বা জেরোসিস বলা হয়ে থাকে। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলো হল, গোসলের পর বা মুখ ধোয়ার পর ত্বক টানটান লাগা, চুলকানি হওয়া, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, ফ্যাকাসে ত্বক, চামড়ায় জ্বালা ধরা, চামড়া উঠে যাওয়া ইত্যাদি।

কেন হয়ঃ

আমাদের চামড়ায় অনেকগুলো স্তর থাকে। তাদের মধ্যে, সবচেয়ে বাহিরের দিকের স্তরটি, আমাদের শরীরকে আবৃত করে রাখে। এই স্তরই পানি ধারণ করে, ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিকর পদার্থ শরীরে প্রবেশে বাধা দেয়। কোনো কারণে এই স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হলে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। আর তখনই ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

নানা কারণে ত্বকের এই শুষ্কতা হতে পারে, যেমন,

. শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব হলে ত্বক শুষ্ক হতে পারে।

. শীতকালে বাতাসে জলীয়বাষ্প কমে গেলে, তখন তা ত্বক থেকে পানি শুষে নেয় এবং ত্বক রুক্ষ ভাব ধারণ করে।

. রুম হিটার, এয়ারকন্ডিশনারের কারণেও রুমের জলীয়বাষ্প কমে ত্বক শুষ্ক হতে পারে।

. বংশগত বা জিনগত কারণে অনেকের ত্বক শুষ্ক হতে পারে।

. সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে, ত্বকের বাইরের স্তর পাতলা হতে শুরু করে। এর ফলে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হতে শুরু করে।

. সরাসরি সূর্যের উত্তাপে বেশিক্ষণ থাকলে, ত্বকের পানি ও নিঃসরিত তেল শুকিয়ে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

. ক্লোরিনযুক্ত পানিতে অতিরিক্ত সাঁতার কাটলে বা গোসল করলে, ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হতে পারে। সাবান, ক্লিনজার ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করার সময় ত্বকের পানি ও তেল শুষে নেয়। এগুলো যত বেশি ক্ষারীয় হয় ততবেশি তেল ও পানি শুষে নেয়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

. পেশাগত কারণে অনেকের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

. থাইরয়েড এর অসুখে, ডায়াবেটিস, চর্মরোগ, কিডনির অসুখ, পুষ্টি ও ভিটামিনের অভাব ইত্যাদি কারণেও ত্বক শুষ্ক হতে পারে।

কি করণীয়ঃ

শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় দেরি না করে, ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি।

এছাড়া এক্ষেত্রে যা করা যাবে, তা হল,

. শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি পেতে দিনের বেলায় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস জল পান করা উচিত।

. ত্বকের শুষ্কতা কমাতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। আপনি যখন ব্যায়াম করেন, তখন আপনার ঘাম হয়। এতে আপনার লোম ছিদ্র খুলে যায় এবং ভিতর থেকে প্রাকৃতিক তেল বাইরে বের হয়। এই তেল আপনার ত্বককে নমনীয় করে রাখে এবং শুষ্কতাকে বাধা দেয়। এছাড়া ঘামের মাধ্যমে শরীরের আবর্জনাও বের হয়।

. প্রতিদিন প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খান।

. নিয়মিত পেট ক্লিয়ার রাখুন। দরকার হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

. কোন প্রকার মানসিক দুশ্চিন্তা, অশান্তি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

. রাতে ৭/৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।

. গোসলে সাবান ব্যাবহারে সতর্ক হন, এক্ষেত্রে কি ব্যাবহার করবেন, তা আপনার ডাক্তারেরে নিকট থেকে জেনে নিন।

এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্‍সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

…….. তিনা শুভ্র ।।

Leave a comment