কিডনি রোগের মুল কারণ ৩ টি…জেনে নিন ও সতর্ক হউন…

আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল কিডনি। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফলে যে বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়ে থাকে, সেগুলোকে প্রস্রাবের আকারে শরীর থেকে বের করে দেওয়াই কিডনির প্রধান কাজ। এছাড়াও কিডনির আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছ।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের দেশে প্রায় দুই কোটি লোক কোনো না কোনো কিডনি রোগে ভুগছে। কিডনি রোগের কারণ হিসেবে প্রধানত ৩ টি কারণকে মুল কারণ হিসেবে ধরা হয়। এই ৩ টি কারণ ছাড়াও আরও অনেক কারণে কিডনির নানা রোগ দেখা দিতে পারে।
এই কারণ ৩ টি হলঃ

১। অতিরিক্ত গরম তাপমাত্রায়, বিশ্রামহীন ভাবে একটানা কাজ করলেঃ

অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় একটানা কাজ করলে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ বের হয়ে যায়, দেখা দেয় ডিহাইড্রেশন। এই অতিরিক্ত তাপ ও ডিহাইড্রেশন থেকেই কিডনি সমস্যা শুরু হতে পারে।
যেসব কর্মীরা দিনের পর দিন রোদের মধ্যে কাজ করছেন, তাদের কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। যারা কাজে কোনো ধরনের বিরতি নেন না, একটানা কাজ করে যান, তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন। খেয়াল করলে দেখা যায়, যেসব এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে, সেসব এলাকাতেই এ রোগের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এলাকাগুলোকে কিডনি রোগের হটস্পট বলা যায়। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পানি পান, বিশ্রাম, বিরতি, ছায়া নিয়ে কাজ করা উচিত।
যদি আপনার কিডনিতে কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে উচ্চ তাপমাত্রায়, একটানা কাজ করা উচিত নয়। ডিহাইড্রেশন নিয়ে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেওয়া উচিত নয়।
কিডনি ভালো রাখতে সবারই পর্যাপ্ত পানি পানি পান করতে হবে। অসুস্থতায় (জ্বর, ডায়রিয়া, বমি প্রভৃতি) এবং ব্যায়ামের পর পানির চাহিদা বাড়ে। বিশেষত ডায়রিয়া বা বমি হলে পর্যাপ্ত পানি, স্যালাইন এবং অন্যান্য তরল খাবার খেতে হবে অবশ্যই। অতিরিক্ত ঘাম হলে পানি খাওয়ার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে।

২। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে।

৩। অনিয়ন্ত্রিত হাই ব্লাড প্রেশার থাকলে।

উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন অথবা পরিবারের কারো কিডনির সমস্যা থাকলে, কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই আপনার যদি এগুলোর কোনো একটিও থাকে, তাহলে নিয়মিত কিডনির পরীক্ষা করান।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া কিডনির পক্ষে খুব খারাপ। বিশেষ করে যথেচ্ছা ব্যথার ওষুধ কিডনির পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। এছাড়া ধূমপান ও মদ্যপান কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ধূমপান একদিকে যেমন ক্ষতি করে কিডনির, অন্যদিকে ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দেয়, ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত করে তোলে, ব্রেইনের কার্যকারিতা নষ্ট করে, মানুষের জীবনী শক্তি কমিয়ে দেয় এবং ক্যান্সার সৃষ্টি করে।

চিকিৎসকরা বলছেন, দৈনিক ৩০ মিনিটের শরীরচর্চা করা বা হাঁটা, কিডনি সচল রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম বা হাঁটাতে ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল, স্থূলতা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রনে আসে।

এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্‍সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

…….. তিনা শুভ্র ।।

Leave a comment