রোযার শেষে ঈদে বদহজম হলে বা পেট ফাঁপলে কি করবেন, জেনে নিন…।।

………….

এক মাস রোজা রাখার পর, হঠাৎ করে ঈদের দিন অনেক খাওয়া-দাওয়ার পর, অনেককেই নানা রকম অসুবিধা বা অসুস্থতায় পরতে দেখা যায়। দেখা দিতে পারে এসডিটি, বুক জ্বালাপোড়া, পাতলা পায়খানা, বদহজম, পেট ফাঁপা ইত্যাদি। ঈদের সময়, খাদ্যনালীতে তেমন কোনো বড় সমস্যা না থাকা সত্যেও অনেকেরই খাদ্য হজম হতে চায়না। সামান্য কিছু খেলেই পেট কামড়ায় আবার পায়খানা করলে অস্বস্তি বোধটা কমে যায়।
বদহজম খুবই পরিচিত এবং বিরক্তিকর স্বাস্থ্য সমস্যা। যদিও এটি মারাত্বক কোন সমস্যা নয়, তবুও বছরের পর বছর এই সমস্যা তীব্র হতে থাকলে,অবহেলা করাটা উচিৎ হবে না। তাই নিজের প্রতি দৃষ্টি দিন এবং সুস্থ জীবন যাপন করুন। এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চললেই আপনি বদহজম থেকে, অনেকটা আরাম পেতে পারেন, যেমন,

১। একবারে অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে, ধীরে ধীরে ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। এতে পেট ফাঁপার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই একবারে বেশি না খেয়ে, বারবার অল্প করে খাওয়া যেতে পারে।
আবার অনেকেই ভালোভাবে না চিবিয়ে বড় বড় গ্রাসে খেয়ে থাকেন এবং খাবারের মাঝে বারবার পানি খেয়ে থাকেন যা বদহজম ঘটাতে পারে।

২। খাবারে অতিরিক্ত তেল, মশলার ব্যবহার করা উচিত নয়। কেননা, এগুলো পেটের নানান সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই বিভিন্ন রিচ ফুড, ফাস্টফুড, অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিমাণে যথাসম্ভব কম করে খেতে হবে।

৩। খাবার খাওয়ার পর কখনো শুয়ে পরবেন না। এর ফলে খাবার হজম ঠিকমতো হবে না। এতে অ্যাসিডিটি বেড়ে যাবে, পেট ফুলে যাবে এবং বুকে ব্যথা ও নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে। সম্ভব হলে খাওয়ার পর হালকা চলাফেরা করুন, থালা বাসন ধুয়ে ফেলতে পারেন, রান্না ঘর গুছিয়ে রাখতে পারেন। এতে কিছুটা পরিশ্রম হবে, যা আপনার শরীরের জন্য উপকারী।

৪। খাওয়ার এক / দেড় ঘন্টা পর, হালকা হাঁটাহাঁটি করতে হবে, যাতে হজম প্রক্রিয়া সচল থাকে ও খাবার নিচে নামতে থাকে। ৩০/৪৫ মিনিট হালকা হাটাহাটিই যথেষ্ট। কিন্তু, ব্যায়াম বা জগিং করা যাবে না। শরীরের জন্য হাঁটা বা ব্যায়াম উপকারি হলেও, ভরপেটে খাবার খাওয়ার পর পর ব্যায়াম করলে বদহজম হতে পারে।

৫। খাওয়ার দেড় ঘন্টা পর থেকে, পর্যাপ্ত পানি খাওয়া শুরু করতে হবে, হজমের জন্য। পেট হয়তো ভরা থাকবে, তবুও অল্প অল্প করে বারে বারে পানি পান করতে হবে। তবে কোন কোল্ড ড্রিঙ্কস পান না করাই ভাল।

৬। অতিরিক্ত মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, খাবার হজমে বাঁধা দিতে পারে। তাই যেকোনো মানসিক সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

৭। অতিরিক্ত রাত জেগে থাকার অভ্যাস, বদহজমের আরেকটি বড় কারণ।

৮। মদ্যপান এবং ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে।

বদহজম হওয়ে করণীয়ঃ

বদ হজম হলে সাথে সাথে বাড়তি খাবার গ্রহণ করা যাবে না। এসময় শুধুমাত্র প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। হালকা হাঁটাহাঁটি করুন, এতে আপনার খাদ্যনালীর গতি স্বাভাবিক হতে থাকবে। আপনি চাইলে এণ্টাসিড ট্যাবলেট বা সিরাপ খেতে পারেন। তবে যেকোনো ওষুধ খাবার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
দেখা যায় বদহজম নিজ থেকেই ভাল হয়ে যায়, শুধুমাত্র প্রচুর পানি পান ও হাঁটাহাঁটি আপনাকে অনেকটা আরাম এনে দিবে।
তবে যদি কারো বারে বারে বদহজম দেখা দেয়, তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্‍সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

…….. তিনা শুভ্র ।।

Leave a comment