লিপিড প্রোফাইল কি? জেনে নিন বিস্তারিত……।
…………………………
যাদের বয়স ৪০ এর উপর, তাদের অবশ্যই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মত রক্তের লিপিড প্রোফাইলের পরীক্ষাটি করিয়ে নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
আমরা অনেকেই রক্তের লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হই। ঠিকমতো বুঝতেও পারি না যে, লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষাটি আসলে কি। বুঝে উঠতে পারি না যে, এই পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা কি।
আজ আমরা সহজ ভাবে জানবো, রক্তের এই লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষাটি কি এবং এতে আমাদের কি উপকার হবে……
লিপিড শব্দের অর্থ হচ্ছে চর্বি। লিপিড প্রোফাইল হলো এমন এক পরীক্ষা, যার সাহায্যে রক্তে চার ধরনের চর্বির মাত্রা নির্ণয় করা যায়। সকলের রক্তেই কম বা বেশি চর্বি থাকে। আর এই চর্বির মাত্রা র্নিণয় করার জন্যই লিপিড প্রোফাইল টেস্টে করতে হয়। আর এই চার ধরনের চর্বি গুলো হল,
১। টোটাল কোলেস্টেরল (TC)
২। লো-ডেনসিটি লাইপো-প্রোটিন কোলেস্টেরল (LDLC )
৩। হাই-ডেনসিটি লাইপো-প্রোটিন কোলেস্টেরল (HDLC)
৪। ট্রাইগ্লিসারাইড (TG)
কেন লিপিড প্রোফাইল টেস্টটি করানো হয়?
কারও রক্তে অস্বাভাবিক মাত্রায় চর্বি থাকলে, সেই রোগকে ডাক্তারি পরিভাষায় “ডিজলিপিডেমিয়া” বলা হয়। রক্তে অস্বাভাবিক মাত্রায় চর্বি থাকলে অনেক রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে যেমন-
. অতিরিক্ত চর্বি, রক্তনালীতে জমতে পারে, ফলে হার্টে রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে হার্ট অ্যাট্যাক হতে পারে।
. ব্রেইনে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়ে স্ট্রোক হতে পারে।
. উচ্চরক্তচাপ, কিডনি রোগ, ডায়বেটিস, ফেটি লিভার ইত্যাদি হতে পারে এবং তা থেকে হতে পারে আরও অনেক জটিলতা।
কারা এই পরীক্ষাটি নিয়মিত করবেন?
. বয়স্ক ব্যক্তি কিংবা যাদের বয়স ৪০/৪৫ বছর এর বেশি
. স্থূলকায় বা অবেস ব্যক্তি
. শারীরিক কাজ কিংবা নিয়মিত ব্যায়াম করেন না যারা
. মদ্যপান, ধূমপান ও অন্যান্য নেশা করেন যারা
. হাই ব্লাড প্রেশার এবং ডায়াবেটিসের রোগী
. দীর্ঘকালীন কিডনি ও লিভারের রোগী
. হাইপোথাইরয়েডের রোগী
লিপিড প্রোফাইল (Lipid Profile ) কম রাখার উপায়:-
প্রথমে আপনাকে ব্লাড টেস্ট করে জানতে হবে আপনার রক্তে লিপিড এর পরিমাণ কত।
অনেক মানুষ আছেন যারা বাইরে থেকে দেখতে হয়তো অতটা স্থূলকায় নন। কিন্তু এই লিপিড প্রোফাইল টেস্টের মাধ্যমে দেখা যায়, তিনি এই ডিজলিপিডেমিয়া রোগে ভুগছেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসক তার স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে, তার রক্তের চর্বি কমানোর ওষুধ, নিয়মিত ব্যায়াম ও পরিমিত আহার সহ নানান পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এক্ষেত্রে আপনার শত্রুতা বাড়াতে হবে, তেল, চর্বি, রেড মিট বা গরু, খাসি, ভেড়ার মাংস, চিনি, সাদা ভাত কিংবা সাদা রুটি, মানসিক চাপ, ধুম পান ও মদ্যপানের সাথে।
আর বন্ধুত্ব বাড়াতে হবে, শাক সবজি, ফলমূল, মাছ, পানি পান, নিয়মিত ১ ঘণ্টা হাঁটা, রাতে ৭/৮ ঘণ্টা ঘুমের সাথে।
এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।
যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
…….. তিনা শুভ্র ।।
