মানুষের কি আসলে ইচ্ছাশক্তি আছে? 

প্রশ্নগুলো সহজ (পর্ব ৬)

বিজ্ঞান বলে, সময় শুধুই আরেকটা মাত্রা, স্থান আর কাল মূলত একই জিনিস। সেই অর্থে ভবিষ্যৎ অতীতের মতোই অপরিবর্তনীয়, মানে মানুষ কি করবে তা পূর্বনির্ধারিত – অর্থাৎ মানুষের জীবনের পথ সে নির্ধারণ করে না, তার পছন্দগুলো নির্ধারিত হয় তার ডিএনএ-র পূর্বনির্ধারিত প্রবণতা দিয়ে আর তার পূর্বনির্ধারিত পারিপার্শ্বিকতা দিয়ে।

মানুষের জীবন আসলে নিচের এই চতুর্মাত্রিক ছবির মত – পুরো পথটাই সিনেমার স্নাপশটের মতো সাজানো, পূর্বনির্ধারিত – মানুষের কাজ শুধু নিজের কাজকর্ম দেখে যাওয়া।

মানুষের যদি চেতনা থাকে, সেই চেতনা আসলে এই চতুর্মাত্রিক পথ ধরে অতীত থেকে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায় এইভাবে। 

প্রশ্ন হলো, মানুষের যদি তার নিজের জীবনের ওপর নিয়ন্ত্রণ নাই থাকে, তাহলে অপরাধীর জেল হয় কেন?

ধর্মও কিন্তু একইরকম কথা বলে। বান্দা কিভাবে জীবন-যাপন করবে তা তার জন্মের আগেই নির্ধারিত হয়ে গেছে – কালি শুকিয়ে গেছে, কলম তুলে নেয়া হয়েছে। এখানেও প্রশ্ন, কর্ম যদি নির্ধারিতই থাকে তাহলে পাপীর কর্মফল কেন দোজখ হবে?

এমন কি হতে পারে, পৃথিবী আসলে অসংখ্য? এক পৃথিবীতে আপনি চুরি করেছেন, কিন্তু অন্য পৃথিবীতে আপনি চুরি করেন নি? আর এরকম অসংখ্য সম্ভাবনার অসংখ্য পৃথিবী আছে?

আপনার জন্ম হতে পারে একটি বিশেষ পৃথিবীতে, কিন্তু আপনি চেষ্টার মাধ্যমে, আপনার ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারেন ব্যর্থতার পৃথিবী থেকে সফলতার পৃথিবীতে?

হ্যা, ব্যর্থতার পৃথিবীতে আপনার ব্যর্থ সমাপ্তি পূর্বনির্ধারিত, কিন্তু আপনার চেষ্টা আপনার চেতনাকে অন্য এক পৃথিবীতে নিয়ে যায় যে পৃথিবী সাফল্যের – নিচের ছবির মতো?

বলাবাহুল্য, এখানে ধরে নেয়া হয়েছে, চেতনা বলে একটা জিনিস আছে, আর আমরা দর্শকরা সম্ভবত অন্য কোন জগৎ থেকে এই সমান্তরাল পৃথিবীগুলোকে অনুভব করছি।

Leave a comment