……………………
কোলেস্টেরল হল আমাদের শরীরের রক্তে বিদ্যমান এক ধরনের চর্বি। আমাদের শরীরে দুই রকমের কোলেস্টেরল থাকে। একটি হল উপকারী কোলেস্টেরল আর অন্যটি হল অপকারী কোলেস্টেরল। অপকারী কোলেস্টেরলের হাত থেকে বাঁচার জন্য বিশেষজ্ঞরা যে সমস্ত খাবারগুলি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন কিংবা যে খাবারগুলি খেতে বলেন, সেগুলো হলঃ
১। প্রাণীজ উৎস থেকে আসা সকল প্রকার খাবার ( সামুদ্রিক মাছ ছাড়া) বাদ দিতে হবে কিংবা যথাসম্ভব কমিয়ে দিতে হবে। কেননা কোলেস্টেরলের প্রধান উৎসই হল প্রাণী থেকে আসা খাবারে।
২। উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসা সকল প্রকার খাবার পরিমাণে বেশি খেতে হবে। কেননা, উদ্ভিজ্জ উৎসে কোন কোলেস্টেরল থাকে না।
যেহেতু আমরা বাঙ্গালি, সেহেতু আমাদের প্রধান খাবারই হল ভাত, মাছ আর ডাল। আর এই ভাত, ডাল আসে উদ্ভিদ থেকে, যা কোলেস্টেরল মুক্ত। ডালের মধ্যে ফাইবার ও প্রোটিন রয়েছে, যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ভাত হিসেবে বেছে নিন ব্রাউন রাইস বা বাদামি অরগানিক চাল। এই গোটা শস্য ২০% পর্যন্ত হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ফাস্টফুড, হোটেলের ডুবো তেলে ভাজা খাবার, কোল্ড ড্রিঙ্ক, সোডা, আইসক্রিম, কেক, প্যাস্ট্রি, কুকিজ, চকোলেট, বোতলজাত ফলের রস, বেকড ফুড, প্যাকেট জাত বা টিন জাত বা ক্যান জাত খাবার, পাউরুটি, এগুলো খাওয়া একেবারে কমিয়ে দিন। কারণ এগুলোতে আছে ট্রান্স ফ্যাট, নানান প্রিসারভেটিভ, অতিরিক্ত চিনি, অতিরিক্ত লবণ যা খুব সহজেই আপনার খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিবে। আপনি চাইলে এসকল খাবার ঘরে বানিয়ে খেতে পারেন, যা অনেকটাই স্বাস্থ্যসম্মত হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি রোজ হাঁটা বা শারীরচর্চা করা উচিত। নিয়মিত ১ ঘণ্টা শরীরচর্চা, হাঁটা ইত্যাদি আপনার খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে আনতে সহায়ক হবে।
একজন ব্যক্তির রাতে কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। কেননা রাতে ৭/৮ ঘণ্টা একটানা নিয়মিত না ঘুমালে, শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে। রাতের পর্যাপ্ত ঘুম কোলেস্টেরলের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও কমায়।
চিকিৎসকরা জানান, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে মূলত দুটি কারণে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এর মূল কারণ। আর এজন্য সকল প্রকার প্রাণীজ খাবার কমিয়ে বা বাদ দিয়ে উদ্ভিজ্জ খাবারে আগ্রহ বাড়িয়ে দিন। কমিয়ে দিন সকল প্রকার প্যাকেট জাত/ টিন জাত খাবার। সাথে নিয়ম করে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা হাঁটুন। কোন প্রকার মানসিক দুশ্চিন্তা থাকলে, ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং রাতে একটানা ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।
যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
…….. তিনা শুভ্র ।।
