………………………………..
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সবারই ওজন বাড়তে থাকে। ভারী হতে থাকে শরীর। বাড়তি ওজনের কারণে শরীরে দেখা দেয় নানা সমস্যা। আর এ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ছোটেন এদিক-ওদিক। কেউ কেউ জিমে যাওয়া শুরু করেন, কেউবা ভাত খাওয়া একদম ছেড়ে দেন, কিন্তু কোন কিছুতেই তখন কাজ হয় না, কিংবা অল্প কাজ হলেও সেটা স্থায়ী হয় না। এ অবস্থা থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো খাবার নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সঙ্গে শরীরচর্চা বা হাঁটা বাড়ানো।
আর যারা শরীর চর্চা বা হাঁটাহাঁটি করার পরও মুটিয়ে যাচ্ছেন কিংবা বয়স বাড়ার কারণে যাদের ওজন বেড়েই চলছে, তাদের উচিত হবে আগের চেয়ে বেশি শরীরচর্চা করা বা আগের চেয়ে আরও বেশি পরিমাণ হাঁটা।
যাদের বয়স ৩০/৪০ এর কোটায়, তারা যত সহজে ওজন ঝরিয়ে ফেলতে পারেন, ৫০-এর পর সেটা যথেষ্ট মুশকিল হয়ে যেতে পারে। কারণ ৫০ এর পর, খুব বেশি মাত্রায় পরিশ্রম করে ওজন ঝরিয়ে ফেলা, তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার তারা এমন ব্যায়ামও করতে পারেন না, যা তাদের হাড়ের বা শরীরের উপর চাপ ফেলবে। ৫০ এর পর হঠাৎ দৌড়োলে বা ভারী ব্যায়াম করলে, হাড়ের সংযোগস্থলে চাপ পড়তে পারে, চোট পাওয়া বা কোনও দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও বেড়ে যেতে পারে। সে হিসেবে, হাঁটা তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই নিরাপদ। তাই এই বয়সে হাঁটাই হল সবচেয়ে ভালো শরীর চর্চা।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে, রাতে ঘুমুতে যাবার আগ পর্যন্ত কমপক্ষে ছয় থেকে আট হাজার কদম হাঁটার। মানে হলো, আপনি সারাদিন যাই করুন না কেন, প্রতিদিন যেন আপনার পা ছয়/ আট হাজার কদম হাঁটে। ধরা হয়ে থাকে, প্রতিদিন দশ হাজার কদম হাঁটা, আপনাকে নব জীবন দান করতে পারে। চাইলে, আপনি আপনার মোবাইল ফোনে, পায়ে হাঁটার অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে পারেন, কিংবা স্মার্ট হাত ঘড়ি ব্যবহার করতে পারেন। ফলে প্রতিদিন কত কদম হাঁটছেন, তার হিসাব রাখতে পারবেন।
সাধারণত বয়স বাড়ার কারণে আমাদের বিপাক ক্রিয়া বা মেটাবলিজম কমতে থাকে, যার কারনে ওজনও বাড়তে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মেটাবলিজমের মাধ্যমে শরীরের ক্যালোরি বার্ন হয়। মেটাবলিজম বেশি হলে, বেশি ক্যালোরি বার্ন হয় এবং শরীরে মেদ বা চর্বি জমতে পারে না। আর মেটাবলিজম কম হলে, শরীরে মেদ জমা হতে থাকে। যাদের মেটাবলিজম কম, তারা যতই কম খাওয়াদাওয়া করুক না কেন, তাদের ওজন বাড়তে থাকবে।
যেকোনো প্রকার শারীরিক পরিশ্রমে ক্যালরি বার্ন হয় এবং মেটাবোলিজম বেড়ে যায়। আপনি যত বেশি শারীরিক পরিশ্রম করবেন, আপনার তত বেশি ক্যালরি বার্ন হবে এবং মেটাবলিক রেটও বাড়তে থাকবে। প্রতিদিন ছয় থেকে আট হাজার কদম হেঁটে, আপনিও আপনার মেটাবোলিজমকে চাঙ্গা রাখতে পারেন আর কন্ট্রোলে রাখতে পারেন বাড়তি ওজনকে।
সাধারণত, ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, শরীরে রোগের কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। তাই মানুষ দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকে এবং তারা ধারনা করে, মোটা হওয়া সত্ত্বেও তাদের কোনও রোগ নেই। কিন্তু এটি তাদের সবচেয়ে বড় ভুল৷ কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই, তাদের শরীরে রোগ গোপনে বাসা বাধে। তাই সুস্থ থাকতেই শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন এবং সুস্থতা ধরে রাখুন।
এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।
যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
…….. তিনা শুভ্র ।।
