বাড়তি ওজন কিংবা পেটের মেদ কমাতে এই তিন ধরনের খাবার প্রতিদিন খান…।।

………

পেটের মেদ কমানোর জন্য, তিন ধরনের খাবার যদি আপনি, একটানা নিয়ম করে খেতে পারেন, তাহলে আশা করা যায়, ২/৩ মাসের মধ্যে আপনার পেটের মেদ কমতে শুরু করবে। শুধু তাই না, এই খাবারগুলোর সাথে সাথে, নিয়মিত ৪৫-৬০ মিনিট জোরে জোরে হাঁটা, রাতে ৭/৮ ঘণ্টা একটানা ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া বাধ্যতামূলক।
আর এই তিন ধরনের খাবার হলো :
১। পানি
২। খাদ্য আঁশ বা ফাইবার
৩। প্রোটিন।

১। পানিঃ
সারাদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। ওজন কমানোর জন্য, প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার পর্যন্ত পানি পান করতে পারেন। তবে কারো যদি কিডনি সমস্যা বা অন্য কোন শারীরিক সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ মতো পানি পান করতে হবে।

২। ফাইবারঃ
উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসা, খাবারের পরিমাণ যথাসম্ভব বাড়িয়ে দিন আর কমিয়ে দিন পুরোপুরিভাবে প্রাণীজ উৎস থেকে আসা খাবারগুলো।
উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসা খাবার, যেমন, বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, ফলমূলে থাকে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ বা ফাইবার। শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি কমাতে, ওজন কমাতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, এককথায়, শরীরকে সুস্থ রাখতে, এই খাদ্য আঁশ বা ফাইবারের কোন বিকল্প নেই।
আপনার হয়তো মনে হতে পারে যে, আপনি পর্যাপ্ত সবজি খাচ্ছেন। তবে তা সবসময় ঠিক নয়। মেদহীন সমতল পেটের জন্য প্রচুর পরিমাণে সবজি খাওয়া জরুরি। অন্তত পক্ষে, প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত কাপ সবজি এবং ফল খাওয়া উচিত। এতে বিদ্যমান খাদ্য আঁশ বা ফাইবার, আপনার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখবে এবং হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করবে, যা ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

বলা হয়ে থাকে, ওজন কমানোর জন্য, প্রতিদিন প্রাপ্ত বয়স্ক একজন পুরুষ ৩৮ গ্রাম এবং মহিলা ২৫ গ্রাম ফাইবার গ্রহণ করতে পারবে। উদাহরণ স্বরূপ, ( সারাদিনে )

. লাল চালের ভাত ১ কাপ
. ফল ২ থেকে ৩ কাপ (কম মিষ্টি যুক্ত হলে ভালো হয়)
. সবজি ৩ থেকে ৪ কাপ
. ডাল ১ কাপ
. বাদাম বা বীচি ১ মুঠ

৩। প্রটিনঃ
খাবারে উদ্ভিদ থেকে আসা, প্রোটিনের পরিমাণ যথা সম্ভব বাড়িয়ে দিন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, শরীরে যেন প্রাণীজ প্রোটিন বেশি মাত্রায় না যায়। যেমন, বাড়িয়ে দিতে হবে, বিভিন্ন ধরনের ডাল, বিভিন্ন রকমের বিচি, বিভিন্ন রকমের বাদাম ইত্যাদি আর কমিয়ে দিতে হবে, গরু, খাসি, ভেড়ার মাংস কিন্তু মাছের পরিমাণটা আবার বাড়িয়ে দিতে হবে।
আর প্রতিদিন ১ টার বেশি ডিম খাওয়া ঠিক নয় এবং দুধের ক্ষেত্রে লো ফ্যাট মিল্ক বা সর ছাড়া দুধ পান করতে হবে।

প্রোটিন-জাতীয় খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয়। ফলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। এতে করে বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি ঝোঁক কমে যায় এবং পেটে বাড়তি মেদ জমার সম্ভাবনা কমতে থাকে। পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ প্রাকৃতিকভাবেই রক্তের শর্করা ও ইন্সুলিন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
প্রতিদিন, সারা বেলার সকল খাবার থেকে, দেহের ওজনের প্রতি কেজির জন্য, ১.৬ থেকে ২.২ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা আদর্শ।
ধরুন, আপনার ওজন ৭০ কেজি, তাহলে ওজন কমানোর লক্ষ্যে, আপনার প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ হবে
দৈনিক মোট {৭০ x (১.৬ থেকে ২. ২) } গ্রাম
= ১১২ থেকে ১৫৪ গ্রাম

উপরের এই খাবার গুলো, পরিমাণ মতো, গ্রহণের পাশাপাশি, প্রতিদিন নিয়মিত ৪৫-৬০ মিনিট জোরে জোরে হাঁটা বাঞ্ছনীয়। এর সাথে সাথে রাতে একটানা ৭/৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে এবং যদি কারো মানসিক সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অতি দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি।

এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্‍সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।

যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

…….. তিনা শুভ্র ।।

Leave a comment