ওস্তাদ শান্ত কণ্ঠে বললেন, “মৃত্যু হলো খোদাকে পাওয়ার দরজা।”
যুবক অস্থির স্বরে বললো, “খোদাকে আমি ভালোবাসি। তাহলে কেন আমি এই পৃথিবীতেই তাকে পেতে পারি না?”
“কারণ, পৃথিবীটা হলো বিশ্বাসীর জন্য পরীক্ষা, আর পরীক্ষার হলে প্রশ্নের উত্তর সরবরাহ করা হয় না।”
যুবক মানতে পারলো না, সে ধ্যান করে খোদার দর্শন পেতে চাইলো। দিনের পর দিন সে মুরাকাবা করে কাটালো, তারপর একসময় প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়লো।
যুবকের একাগ্রতা দেখে ওস্তাদের মন গললো, তিনি ইঙ্গিত দিয়ে বললেন – “খোদা পৃথিবীকে সৃষ্টি করেন প্রতি মুহূর্তে নতুন করে, সুতরাং তাকে পেতে হলে তোমাকে বন্দি করতে হবে বর্তমান নামের মুহূর্তটিকে।”
যুবক হাসলো। সে তার ইঙ্গিত পেয়ে গেছে।
এরপর থেকে যুবক নানাভাবে বর্তমানকে আটকাতে চেষ্টা করলো। সে আধুনিক ক্যামেরা দিয়ে বর্তমানের ছবি তুললো, যদিও ছবি প্রিন্ট করার আগেই ওই বর্তমানটা অতীত হয়ে গেলো। সে আত্মসম্মোহন করে বর্তমান মুহূর্তটিতে মনোনিবেশ করার চেষ্টা করলো, কিন্তু মনের গভীরে সময়ের কোন বিন্দুকে সে শনাক্ত করতে পারলো না। দিনের পর দিন নানা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে সে ফিরে চললো তার শায়খের দরবারে।
ওস্তাদকে সব কথা খুলে বলতেই তিনি হাসলেন। যুবক ভক্তের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন – “সময় হলো অতীত আর বর্তমানের ছেদবিন্দু। যেহেতু বিন্দুর কোন মাত্রা নেই, সেহেতু অতীত হলো স্মৃতি, ভবিষ্যৎ হলো ছলনা, আর বর্তমান হলো অস্তিত্বহীন।”
সেই থেকে যুবক খোদার সিদ্ধান্তকে সম্মান করতে শিখলো। সে শিখলো যে না দেখেও খোদাকে পাবার জন্য চেষ্টা করে যাওয়াই ইবাদত, আর বাড়াবাড়ি করা সবসময়ই বোকামি।
