জেনে নিন, কেন এমন হয় আর কি করা উচিত…
………………………………
খাবার পর ক্লান্তির কারণ সম্পর্কে, গবেষকেরা বিভিন্ন তত্ত্ব হাজির করেছেন। তবে সাধারণভাবে তারা একমত যে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, এতে চিন্তার কোনো কারণ নেই। সাধারণত, কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, অন্য খাবারের তুলনায়, মানুষকে বেশি ক্লান্ত অনুভব করাতে পারে।
শুধু দুপুর নয়, দিন/রাতের যেকোনো সময়, খাওয়ার পরপরই ঘুম ঘুম ভাব আসতে পারে। প্রধানত, ২টি কারণে এটি হয়।
প্রথমত, পেট ভর্তি করে ভাত খাওয়ার পর, শরীরের বেশির ভাগ রক্ত, খাদ্যনালীর দিকে সঞ্চালিত হয়, যাতে হজম পক্রিয়া সহজতর হতে পারে। এর ফলে ব্রেইনে, রক্তের অক্সজেনের প্রবাহ কমে যায়। তখন, ঘুম ঘুম অনুভূতি আসে।
দ্বিতীয়ত, কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা ও প্রোটিন বেশি থাকে, এমন খাবার খাওয়ার ফলে, শরীরে এই খাবারগুলো ভেঙ্গে, রক্তে গ্লুকোজ, দ্রুত বৃদ্ধি পায়। রক্তের এই অতিরিক্ত গ্লুকোজ কমানোর জন্য, রক্তে বেশি ইনসুলিন আসতে থাকে। আর এই ইনসুলিনের জন্য, রক্তের গ্লুকোজ তখন কমা শুরু করে। ফলে, দ্রুতই আপনার এনার্জি বা শক্তি কমে যায়। যার ফলে, আপনি ক্লান্ত বোধ করেন, আপনার ঘুম পায়।
তাই খাবার পরে, অল্প কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে, এই এনার্জি বা শক্তি, কমে যাওয়ার ব্যাপারটা অনেকাংশেই কমানো সম্ভব। আপনার শক্তির মাত্রা ধরে রাখতে, প্রতি খাবারের পর ১০-১৫ মিনিট হাঁটুন। এই হাঁটাহাঁটি, খাবার খাওয়ার পর, গ্লুকোজ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা কমাতে সক্ষম। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুপুরের খাবারের পর, অন্ধকার ঘরে থাকার চেয়ে, সূর্যের আলোতে বা উজ্জ্বল আলোতে থাকলে, ক্লান্তি বোধ কম হয়।
দুপুরে ঘুমিয়ে পড়ার, একটি স্বাভাবিক প্রবণতা রয়েছে শরীরের। এটা স্বাভাবিক এবং খাবার না খেলেও, দুপুরে ঘুম পেতে পারে। এই কারণেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সকলকে দুপুরে খাবার, হালকা রাখার পরামর্শ দেন। একসঙ্গে বেশি করে খাবার খাওয়ার পরিবর্তে, অল্প অল্প করে কয়েকবার খান। খাবারের পর কিছুটা হাঁটাহাঁটি করুন, এটি ঘুম এবং অলসতার সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে। খাওয়ার আগে ও পরে প্রচুর পানি পান করুন। প্রতি রাতে ৭/৮ ঘণ্টা, একটানা ঘুম নিশ্চিত করুন। কারো কোন মানসিক চাপ বা সমস্যা থাকলে, দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
এছাড়া খাবারের পর, ক্লান্তি বোধের অন্যান্য কিছু কারণও থাকতে পারে। যেমন: রাতে কম ঘুমানো, খাবারের সঙ্গে অ্যালকোহল পান করা, হরমনাল সমস্যা, রক্ত স্বল্পতা, ডায়াবেটিস, মানসিক অশান্তি, এবং শারীরিক নানাবিধ রোগ।
তবে যদি খাওয়ার গ্রহণের পর, ক্লান্তিভাব কোনোভাবেই না কাটে এবং এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এই লেখার উদ্দেশ্য চিকিত্সা নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কোন ভাবেই, এটিকে প্রেসক্রিপসন বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।
যেকোনো রোগ বা সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
