Author: Samir/ সামির
সময়
সমাজ, সামাজিকতা আর সঙ্গ
গ্রামের পুকুর একদিন অদুরের নদীকে বলল, “কেমন মানুষ তুমি, যেখানে সেখানে যাও, যার তার সাথে মেশো! আমাকে দেখ এই গণ্ডির বাইরে আমি কোথাও যাই না!” নদী বেচারা হাসি মুখে জবাব দিল, “প্রবাহই তো আমার বৈশিষ্ট, এটা বাদ দেব কিভাবে? তাছাড়া সমুদ্রকে দেখ, কি বিশাল, কোন কুল কিনারাই নেই!” পুকুর বিরক্ত হয়ে জবাব দিল, “সমুদ্রের আবার কুল কিনারা কি, তার তো জাতেরই ঠিক নেই, নদী এলেই তাকে গ্রহণ করে নেয়!” নদী হতাশ হয়ে আর জবাব না দিয়ে সমুদ্রের দিকে বয়ে চলল, আর অহংকারি পুকুর তার গণ্ডির মাঝে সুখেই থাকল যতদিন না বানের পানি আসলো!!
ওপরের গল্পটা সমাজ ও সামাজিকতার কথা ভেবেই লেখা। দৈনন্দিন কথোপকথনে খুব সহজেই আমরা যে বিষয় গুলোতে মনোযোগ দেই তার একটা হল, সমাজ। মানুষ সামাজিক জীব। এই সমাজকে ঘিরে আমরা নানা সবকও একে অন্যকে দিয়ে থাকি। কিন্তু প্রশ্ন হল সমাজ আসলে কি? অন্তত, আমাদের কাছে কি?
প্রাথমিকভাবে, যাদের সাথে আমাদের চলাফেরা, ওঠা বসা এদের নিয়েই আমাদের সমাজ। অর্থাৎ…
View original post 558 more words
নিসঙ্গতা আর স্রষ্টা
প্রথমেই বলে নেয়া দরকার, এই লেখাটা তাদের জন্য যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করেন বা অন্তত তা দাবি করতে পছন্দ করেন। এ পৃথিবীতে মানুষের জীবনধারা নানা রঙের, নানা আকারের। কারো অর্থ নেই, কিন্তু সঙ্গ আছে। আবার কারো অর্থ আছে তবে সঙ্গ নেই। আবার অবস্থার বদল হয়ে মানুষ ঠিক বিপরিত ধরণের জীবনেও চলে যায়। দুই চরম অবস্থাতেই মানুষ কষ্টের জীবন যাপন করবে, এটাই স্বাভাবিক। আবার এ থেকে বের হয়ে আসার পথও খুঁজতে হবেন ঐ মানুষকেই। এ লেখার উদ্দেশ্য সেই পথ খোঁজাকে কেন্দ্র করে।
যে বিশ্বাসীর অর্থ নেই, তার জন্য প্রথম এবং প্রধান পদক্ষেপ হল অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করা এবং সে চেষ্টাতে স্রষ্টার সাহায্য কামনা করা। এ পদ্ধতি যার পছন্দ নয়, তার সহায় কেবল স্রষ্টাই হতে পারেন, আমার মতো মানুষ নয়। অন্য দিকে বিত্তবানের নিঃসঙ্গতা এর চেয়ে একটু জটিল। কখনো কখনো বিত্তবানের মন মানসিকতা তাকে নিঃসঙ্গতার কোনায় ঠেলে দেয়, আবার কখনো তাদের অপারগতা আর দুর্বলতা। যে বা যারা সামাজিক জীবনের মধ্যে এর সমাধান খুঁজছেন…
View original post 580 more words
শত্রু
বেশ অনেক দিন পর লিখছি। কাজের ফাঁকে একাধিক ভাষায় লেখা কঠিন, সময় হয়ে উঠে না। আজ একটা বিষয় হঠাৎ খুব নাড়া দিল। তাই, ভাবলাম দু’লাইন লিখেই ফেলি।
টিভিতে বাংলাদেশ আর নিউজিল্যানড এর ক্রিকেট খেলা চলছে। খেলছে দু দেশের মেয়েরা। কিউই মেয়েরা নিঃশংকোচে ব্যাটিং করে গেলো। যতটা পারে রান করল। কোন ভয় ডর চোখে পড়ল না। এরপর নামলো বাঙালি মেয়েরা। অনেক শংকা তাদের শরীরের ভাষায়, খুব সাবধানে তারা একের পর এক বল খেলে গেলো। আউটও হল। অবাক হয়ে ভাবছিলাম, কিসের এতো ভয় ওদের। আউট তো হচ্ছেই, একটু নাহয় খেলেই আউট হোক। হঠাৎ পাশে বসা আরও বাঙ্গালিদের মন্তব্য কানে এলো। কেউ একজন বলছে, “কিউই মেয়ে গুলো কি সুন্দর, আমাদের মেয়েগুলো সব কালা-কুলা।” মাথায় চিন্তা খেলে গেলো। ভাবলাম, চেহারা আসে মূলত জন্ম সূত্রে; সেই চেহারার ব্যাপারেই যদি আমরা এতো অসহিষ্ণু হই, তাহলে কাজ – যা আমাদের চেষ্টার ওপর নির্ভর করে তার ব্যাপারে আমরা কতটুকু সহিষ্ণু হতে পারবো?
সহজ করে বলি। একজন কিউই যখন…
View original post 292 more words
ভারসাম্য
এক তরফা ডিনায়েল অফ ডেথ নিয়ে ভাবছি বেশ অনেক বছর হল। এটা সত্য যে আমাদের মধ্যে ডিনায়েল অফ ডেথ এর মাত্রা খুবই তীব্র; এতটাই তীব্র যে এটা ব্যক্তি এবং সমাজের জন্য এক বড় সমস্যা। তাই ডেথ এন্ড অ্যাডজাস্টমেন্ট হাইপোথিসিস দিয়ে আমি বুঝার চেষ্টা করেছি কিভাবে আমরা এই পর্যায়ে এলাম। এটাকে আমি এখনও ভালো ইনটারপ্রিটেশন মনে করি। তবে যা এতে করা হয়নি, তা হল মৃত্যুকে অপছন্দ করা বা এড়িয়ে চলার প্রয়োজনীয় দিকটা । আসলে মৃত্যুকে স্মরণে রাখা এবং ভুলে থাকার ভারসাম্যের মধ্যেই জীবনের স্থিতি। তাই স্বীকার করছি, যা আমার করা উচিত ছিল, এই ভারসাম্যের জন্য কাজ করা। যাহোক, দেরিতে হলেও কাজটা শুরু করতে চাই।
খুব সহজ করে ভাবতে চাই বিষয়টা নিয়ে। তাই ঠিক করেছি একজন করে চরিত্র উপস্থাপন করবো যারা প্রত্যেকে একেক ধরণের দলের প্রতিনিধি। এরা সবাই কাল্পনিক চরিত্র, বাস্তবের কাউকে উদ্দেশ্য করে লেখা নয়।
প্রথম যার কথা লিখবো তার নাম ধরে নেই তুর্য। জীবনের ব্যাপারে সে উচ্চাকাংখি। সে জানে খুব…
View original post 754 more words
নেশা
জীবনে কখনো সিগারেটে একটা টানও দেইনি। কখনো মনেই হয়নি মদ পানের কথা। অন্যান্য নেশার ব্যাপারে আমার মানসিকতা হল- এরা ভয়াবহ ফাঁদ, কোন ভাবেই যেন এতে ধরা না পড়ি। কিন্তু তার মানে কি আমি নির্ভরশীলতা-মুক্ত জীবন যাপন করতে পেরেছি? দেখি বিশ্লেষণ কি বলে!
জীবনের প্রথম পরশ মায়ের আর বাবার। একটা সময়ে তারা জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছে। তারপর দিনে দিনে বড় হয়েছি, কিন্তু মা-বাবার প্রয়োজন কমেছে বলে মনে হয় না। একমাত্র তাদের মৃত্যুর পর খুব কঠিন ভাবে বুঝতে পেরেছি, মা-বাবা ছাড়াও বাঁচা সম্ভব। অথচ তাদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সকালে ঘুম থেকে উঠে কিম্বা রাতে ঘুমাতে যাবার আগে, যখনই হোক, তাদের কোন বিকল্প ছিল না। দেশ ছাড়া তো দূরের কথা শহর ছাড়িনি পরিবার থেকে দূরে যেতে হবে বলে। বন্ধু বান্ধব বিসিএস কিম্বা অন্য যেকোনো উচ্চতর পরিক্ষা দিয়ে যখন প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করেছে, আমি তখন অন লাইন এডুকেশন খুঁজেছি, কারণ অন্য সব গুলোর জন্যই ঘর ছাড়তে হবে। কি ভীষণ দুর্বল আর অসহায় আমি! তারপর…
View original post 749 more words
আমি
আমি কে? আমার নাম অমুক, সে তো আমার নাম, সেটা আমার কিন্তু আমি নয়। আমি অমুকের সন্তান, সেটা আমার উৎস কিম্বা পারিপার্শ্বিক যোগাযোগের পরিচয়, কিন্তু আমি? সেটা কে?
আমি হাত, পা, মাথা, হৃদয়, অন্তর সমন্বয়ে তৈরি একজন। অর্থাৎ, এগুলো আমার অংশ, কিন্তু আমি ? আমি মানুষ, অনেকে এটা বলেও তৃপ্তি পান। এটা অনেকটা – বাসার সামনে স্কুল আর স্কুলের সামনে বাসার মতো কারণ যখন কেউ প্রশ্ন করবে দুটো কোথায়, তখন উত্তরটা কি?
আসলে ‘আমি’ এক অদৃশ্য। অর্থাৎ যা সম্পর্কে মানুষের কোন ধারণাই নেই, মানুষ শুধু জানে যে এটা আছে। এটা কোন ধর্মীয় আলোচনা না হলেও বলতেই হয় “আমি” ঠিক যেন কোরআনে বর্ণিত “রূহ” এর মতো যার সম্পর্কে মানুষের কোন জ্ঞান নেই।
যখন মানুষ নিজের আমিত্ব স্পষ্ট করে তুলতে চায়, তখনই সে খোঁজে চেহারা, সৌন্দর্য, সঙ্গি, আশ্রয়, ঠিকানা, ভালোবাসা, প্রতিষ্ঠা, খ্যাতি আরও কত কি। আমিত্বের খোঁজে মানুষ যতই ব্যস্ত হয়ে ওঠে, ততই জীবন কঠিন হয়ে ওঠে। তারপর কোন এক সময় সমাজের…
View original post 96 more words





