ছায়াটা কার?

হাই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আমি লক্ষ্য করেছি, মাঝে মাঝে আমার শরীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় অন্য কেউ। যখন এটা হয়, আমি কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে চলে যাই, তারপর অনেকক্ষণ পরে যখন আমার সম্বিৎ ফিরে আসে তখন দেখি যে আমি একটা কান্ড ঘটিয়ে বসে আছি যদিও ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা … Continue reading ছায়াটা কার?

একটি আয়নার জন্ম ও মৃত্যু সমাচার

১ মতি মিয়া বুঝতে পারছিলো তার সময় শেষ হয়ে এসেছে। ওস্তাদ শমসের আলীর কাছে সে যখন কালো জাদু শেখা শুরু করে, তখন থেকেই সে জানতো এর শেষটা ভালো হবে না। কিন্তু তার যেন কিছুই করার ছিল না, যেন তাকে এটা করতেই হতো।  এ যেন এক নেশা, তাই কিছুতেই এর থেকে তার মুক্তি নেই। অথবা সে … Continue reading একটি আয়নার জন্ম ও মৃত্যু সমাচার

অস্তিত্ববাদী জাহিদের পরাবাস্তব অভিজ্ঞতাগুলো

পূর্বকথন সিদ্ধেশ্বরী লেনের মনোয়ারা ক্লিনিকে গম্ভীর মুখে জন্ম নিলো এক শিশু। বাচ্চারা জন্মানোর পর কেঁদে ওঠে, কিন্তু সে কাঁদলো না। আফতাব সাহেবের ভ্রু জোড়া অনেকটা সময় ধরে ভীষণভাবে কুঁচকে রইলো। ডিউটি ডাক্তার তখন দৌড়ে এলো, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানালো - শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ আছে, বাচ্চারা জন্মানোর পর কেঁদে ওঠে ঠিকই, কিন্তু না কাঁদা অস্বাভাবিক কিছু না। … Continue reading অস্তিত্ববাদী জাহিদের পরাবাস্তব অভিজ্ঞতাগুলো

দ্বিতীয়া

একটা খুট খুট শব্দে রাকিবের ঘুম ভেঙে গেলো। এখনো ভোর হয়নি, ঘরের ভেতর ঘুটঘুটে অন্ধকার। এর মধ্যেই খুট খুট শব্দ হয়ে চলেছে অবিরাম। রাকিব নিশ্চিত হলো, ঘরে আবার ইঁদুর ঢুকেছে। লীনা যখন বেঁচে ছিল, একবার রাকিব আঠার ফাঁদ দিয়ে ইঁদুর ধরলো। সকালে ঘুম থেকে উঠে সে যখন দেখলো আঠায় আটকে ইঁদুর ছটফট করছে, জামানের অন্তরটা … Continue reading দ্বিতীয়া

পুনর্জন্ম  

ছোট ভাই তারেকের সাথে বয়সে কয়েক মিনিট বড় খালেদের প্রথম দেখা হয় মায়ের পেটের আধো-অন্ধকার জগতে। তারেক সেদিন তার পেটের সাথে লেগে থাকা নাড়িটা টিপে টিপে নিজের দিকে খাওয়া টেনে নেয়ার চেষ্টা করছিলো। খালেদের অবাক দৃষ্টি লক্ষ্য করে ছোট ভাই তারেক ব্যাখ্যা করেছিল - "কয়েকদিন পরই তোমার আর আমার প্রসব হয়ে যাবে, আমাদের ক্ষণস্থায়ী এই … Continue reading পুনর্জন্ম  

বৃষ্টিবন্দী কয়েকজন স্বাপ্নিক

সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। এক মেঘলা সন্ধ্যা। অফিস আর বাসা দুই জায়গা থেকেই একসাথে পলাতক হয়ে আমরা কয়েকজন প্রৌঢ় এসে হাজির হয়েছিলাম আমাদের সবার অভিভাবক মার্গুব ভাইয়ের বাসায়। কিন্তু সন্ধ্যা হতে না হতেই শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি। আটকা পড়ে গেলাম আমরা পাঁচজন শান্তিনগরের পুরোনো ধাঁচের এক বিল্ডিঙের প্রায়ান্ধকার একটা একতলায়। বড়ো বড়ো ফোটায় যেভাবে মুষলধারে বর্ষণ … Continue reading বৃষ্টিবন্দী কয়েকজন স্বাপ্নিক

মালিহার দ্বিতীয় চেহারা

“মানুষের চেহারা কি চেঞ্জ হতে পারে? ”– ভদ্রলোক পা নাচাতে নাচাতে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন। ছোটোখাটো লোকটার মুখের ভাবখানা এরকম যে খুব বুদ্ধিমানের মতো একটা প্রশ্ন করে ফেলেছেন। রাত গভীর হওয়ার আগেই আমাকে আবার বাসায় ফিরে যেতে হবে, কিছুক্ষন আগেও এই আতঙ্ক আমাকে অস্থির করে তুলছিলো। ফলে বয়স্ক এই ভদ্রলোককে দেখামাত্র আমি খুশি হয়ে উঠেছিলাম - … Continue reading মালিহার দ্বিতীয় চেহারা

স্কিজোফ্রেনিয়া

মায়িন খান  পর্ব ১ নজরুল বেশী বয়সে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের সময় তার বয়স ছিল তেতাল্লিশ, রুমানার বয়স মাত্র পঁচিশ। সুন্দরী স্ত্রী নিয়ে তার সুখী হবার কথা ছিল, রুমানাও খুব ভালো মেয়ে। কিন্তু কোন প্রাপ্তিই বোধহয় বিনিময় ছাড়া আসে না।  রুমানার খুব বড় একটা অসুখ আছে - সে রাতে ভীষণ ভয় পায়। অনেক মেয়েই রাতে ভয় … Continue reading স্কিজোফ্রেনিয়া

ছায়া কিংবা পরীর গল্প

প্রাক-কথন বিয়ের আগে ছোট বাচ্চাদের দেখলে হামিদের প্রচন্ড গা জ্বালা করতো। তার নিজের ভাতিজা, মানে মারুফ ভাইয়ের পাঁচ বছরের ছেলে রওশন যখন জিদ করে কান্না শুরু করতো, হামিদের মনে হতো একটা চটকনা দিয়ে ওর ঘ্যান ঘ্যান বন্ধ করে দেয়। এমনি ছিল শিশুদের প্রতি হামিদের মনোভাব। এসব কারণেই হামিদের দুশ্চিন্তার সীমা রইলো না, যখন সে জানলো … Continue reading ছায়া কিংবা পরীর গল্প

অনন্ত-অক্ষয় একজন হারিস চৌধুরী

হারিস চৌধুরী নিজেকে নিজে গুলি করলেন, মস্তিষ্ক বরাবর। জীবনে তো অনেক পেয়েছেন। তার জন্ম দরিদ্র পরিবারে, বাবা কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন, দিন এনে দিন খেতেন। হারিসের স্কুলে পড়া নিয়ে আশংকা ছিল। কিন্তু তিনি কেমন কেমন করে স্কুলে গেছেন, এমনকি জগন্নাথ ভার্সিটি থেকে বিএ পাশও দিয়েছেন। তার বাকি ভাই-বোনেরা কেউ স্কুলের গন্ডি পেরোতে পারে নি। সেলসম্যানের চাকরি … Continue reading অনন্ত-অক্ষয় একজন হারিস চৌধুরী