ঘুমের মধ্যে আচমকা ঝাঁকুনি…।।

সারাদিনের কর্ম-ব্যস্ততার পর আমরা রাতে যাই ঘুমাতে, আর যেই আরামদায়ক ঘুমটা চোখে নেমে আসে, অমনি মনে হতে থাকে শরীরটা কেমন যেন ছেড়ে দিচ্ছে, মনে হয় কোন পাহার বা সিঁড়ির উঁচু উঁচু ধাপ থেকে আপনি পড়ে যাচ্ছেন। বুকের ভিতরটা ধড়ফড় করতে করতে পুরো শরীরে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ঘুমটাই ভেংগে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই ঝাঁকুনি কে বলে হিপনিক জার্ক। আমাদের দেহ ঘুমিয়ে যাবার আগেই যদি স্বপ্ন দেখা শুরু হয়ে যায়, তখন আমাদের ব্রেইন এর অনুভূতি অনেকটা ঝাঁকি দিয়ে জাগিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে, আর এটাই হিপনিক জার্ক।
জেগে থাকা অবস্থা থেকে ঘুমাতে যাওয়ার অবস্থার মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটে। এসময় মানুষ পুরোপুরি ঘুমের মধ্যে থাকে না। বরং বলা যায়, সে তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকে, আর এই অবস্থাতেই ব্রেইন স্বপ্ন দেখা শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে জেগে থাকা ও স্বপ্নের সীমানাকে অনেক সময়ই ব্রেইন ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। ফলে সেটার ধাক্কা এসে লাগে শরীরে। শরির যখন তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকে, তখন শরিরের মাংস পেশি গুলো আস্তে আস্তে অবশ হতে থাকে। কিন্তু ব্রেইন শরীরের পেশীর এই অবস্থানকে ঠিক বুঝে উঠতে না পেরে উল্টা সেই প্রক্রিয়াকে আটকানোর চেষ্টা করে, ফলে শরীরে ঝাঁকুনি হয়।
কারনঃ
. অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যাফেইন, চা, কফি, মদ্যপান করলে, অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে।
. রাতে স্ট্রেসফুল কোন কাজ করলে
. রাত জেগে টিভি দেখা, মোবাইল ব ইন্টারনেট ব্রাউজিং করলে।
. ওভার টায়ার্ডনেস বা অতিরিক্ত খাটুনির পর ঘুমালে।
. শরীরে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রনের অভাব হলে।
মুক্তি পাওয়ার উপায়ঃ
হিপনিক জার্ক কোন রোগ নয়, নিয়ম মেনে চললে বারবার এমন হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা কমতে থাকে আর এর নির্দিষ্ট
কোন ওষুধ নেই। তবে কারো এই সমস্যা ঘন ঘন হলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেয়া প্রয়োজন।
জীবন যাত্রা পরিবর্তন, হাল্কা ব্যায়াম ও চাপ মুক্ত থাকতে পারলে খুব সহজেই আরাম পাওয়া সম্ভব।

যে কোন সমস্যা বা রোগের জন্য ডাক্তারের স্মরনাপন্ন হতে হবে।

……ডাঃ তিনা শুভ্র

https://teenasuvrosworld.wordpress.com
(Life Style Medicine)

One thought on “ঘুমের মধ্যে আচমকা ঝাঁকুনি…।।

Leave a reply to সৈয়দ কল্লোল Cancel reply